প্রতীকী ছবি।
পুর-কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিচ্ছেন, জ্বর-ডেঙ্গি মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু নিকাশি, সাফাইয়ের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। অথচ, বেহাল নিকাশির কারণে রিষড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তায় জল জমে রয়েছে। সেই জল ঢুকছে বাড়িতেও। বাড়ছে মশার উপদ্রব। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে স্টেশন লাগোয়া ডক্টর বিধানচন্দ্র রায় সরণিতে প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ করলেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার গাফিলতিতেই এই অবস্থা। অন্তত ৭০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অভিজিৎ দাস অথবা পুরপ্রধানকে ঘটনাস্থলে এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিতে হবে বলে অবরোধ থেকে দাবি ওঠে। দু’জনের কেউই অবশ্য আসেননি। পুলিশের হস্তক্ষেপে বেলা দেড়টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। অবরোধের সময়ে কাউন্সিলর অভিজিৎবাবুকে ফোন করা হলে তিনি কলকাতায় আছেন বলে জানান। পরে জল জমার সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কেএমডিএ ঢাকা দেওয়া নর্দমা তৈরি করেছে। সেখানে কোথাও জল আটকে রয়েছে। সেই জন্যই সমস্যা। জায়গাটা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। সাফাই ও মশা নিয়ন্ত্রণের কাজও ভাল ভাবেই চলছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপি এটা নিয়ে রাজনীতি করছে। ওদের মদতেই অবরোধ হয়েছে।’’
দুর্গাপুজোর সময় শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডেও বেহাল নিকাশির অভিযোগে অবরোধ হয়েছিল। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বৃষ্টি হলেই নর্দমার জল বাড়িতে ঢুকে যাচ্ছে। রাস্তার খানাখন্দে জল জমছে। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে।
অবরোধকারীদের মধ্যে টুম্পা দত্তের ক্ষোভ, ‘‘ঘরে ঘরে জ্বর। অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। মশার ভয়ে জানলা খুলতে পারি না। বাচ্চাদের বাড়ির বাইরে বের করতেও ভয় লাগে।’’ এ শহরেরই বাসিন্দা বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সদস্য পম্পা অধিকারীও অবরোধে শামিল হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘অযোগ্য লোকেরা দায়িত্বে থাকলে এর থেকে ভাল আর কী হবে! রিষড়া স্টেশনের পশ্চিম দিকের এলাকা জ্বর-ডেঙ্গিতে ছেয়ে গিয়েছে। পুরসভা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে।’’
গত মঙ্গলবার রিষড়ার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্ণনগরের এক যুবক মারা যান। তাঁর পরিবারের লোকজন দাবি করেন, ডেঙ্গিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য দাবি করে, ডেঙ্গির উপসর্গ থাকলেও তা মৃত্যুর কারণ ছিল না। এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। ওই এলাকাতেও জ্বরের প্রকোপ ছিল। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল চন্দ্রমণি সিংহের দাবি, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সাফাইয়ের পাশাপাশি ব্লিচিং পাউডার, মশার লার্ভার মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে। এলাকায় ডাক্তার বসছে। সেখানে জ্বরের রোগী নেই।’’