সওয়ার: বাসের ভিতরে জায়গা নেই, অগত্যা এ ভাবেই যাতায়াত। হাওড়ার রানিহাটি মুম্বই রোডে। —নিজস্ব চিত্র
নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে হাওড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করে দীর্ঘক্ষণ ধরে বিক্ষোভ হল শনিবারেও। ফলে, হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি হয়। শুক্রবারেও একই ভাবে রেল ও রাস্তা অবরোধের ফলে যাত্রীরা বিপাকে পড়েছিলেন। অনেকে কলকাতা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরেন মধ্যরাতে।
শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ হাওড়া-খড়্গপুর শাখার সাঁকরাইল স্টেশনে প্রথম অবরোধ শুরু হয়। তা চলে প্রায় বেলা ১টা পর্যন্ত। স্টেশনে ভাঙচুর করে টিকিট কাউন্টারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেটা না-মিটতেই অবরোধ শুরু হয় বাউড়িয়ায়। সেখান থেকে চেঙ্গাইল এবং সব শেষে নলপুরে অবরোধ শুরু হয়। দফায় দফায় রেল অবরোধ চলার ফলে বেলা ১১টা থেকে দূরপাল্লা এবং লোকাল ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরোধ চলে।
বিভিন্ন স্টেশনে বহু মানুষ অপেক্ষা করতে থাকেন। অনেকে কাছাকাছি মুম্বই রোডে চলে আসেন। কিন্তু এখানেও তাঁদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কারণ, সকাল ১০টা থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা সেতুর কাছে অবরোধ শুরু হয়। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। তারা আটটি বাসে যাত্রীদের নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই অবরোধের জের ছড়িয়ে পড়ে জেলা জুড়ে। মুম্বই রোডে দীর্ঘ যানজট হয়।
বেলা আড়াইটা নাগাদ গরফা সেতুর কাছে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলে মুম্বই রোডে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। কিন্তু বিকেলে ফের পাঁচলা-বেলতলা এবং অঙ্কুরহাটিতে শুরু হয় অবরোধ। তা চলে দীর্ঘক্ষণ। শুধু তা-ই নয়, উলুবেড়িয়ার পারিজাত, ধুলাসিমলা, রণমহলে উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর রোড এবং সাঁকরাইলের চাঁপাতলায় সাঁকরাইল-হাওড়া রোডে দিনভর দফায় দফায় অবরোধ হয়। চাঁপাতলায় পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সর্বত্র অবরোধ চলাকালীন টায়ার জ্বালানো হয়। দুপুরে সাঁকরাইলে একটি সমবায় ভিত্তিক আবাসন প্রকল্পের সামনে ডাকঘরে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। বেলা আড়াইটা নাগাদ সাঁতরাগাছি থেকে আমতা পর্যন্ত একটি স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হয়। বহু যাত্রী তাতে চেপে আমতায় আসেন। সেখান থেকে তাঁরা বেশি ভাড়া গুনে অটো রিকশা এবং টোটো ধরে ঘুরপথে বাগনানে আসেন।
অন্যদিকে, এ বিকেলে হুগলির দাদপুরের আমরেতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতেও অবরোধ হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই অবরোধে তীব্র যানজটে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হয়। পুলিশ গিয়ে অবরোধকারী বুঝিয়ে সরিয়ে দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সন্ধে গড়িয়ে যায়।