উলুবেড়িয়া পুরসভা।—ছবি সংগৃহীত।
সংক্রমণের হার কিছুটা হলেও কমেছে বলে দাবি পুর-কর্তৃপক্ষের। তাই, উলুবেড়িয়া শহরে আংশিক লকডাউন-এর মেয়াদ আগামী ১২ অগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে উলুবেড়িয়া পুরসভা সূত্রে খবর।
উলুবেড়িয়ায় করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় গত ১৫ জুলাই-২৯ জুলাই শহরে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই সময়কালে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত দোকান-বাজার খোলা ছিল।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পুরসভায় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। তাতে হাজির ছিলেন পুরসভা, স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ছিলেন বিদায়ী বোর্ডের দুই বিরোধী কাউন্সিলর, সিপিএমের সাবিরুদ্দিন মোল্লা এবং বিজেপির প্রশান্ত শিকারি-সহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা। সেখানে লকডাউন-এর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পুরসভার প্রশাসক অভয় দাস।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বুধবার পুরসভা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আংশিক লকডাউন চলাকালীন করোনা-সংক্রমণের হার কিছুটা হলেও কমেছে। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র উঠে আসায় বৈঠকে হাজির বেশির ভাগ আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি লকডাউন-এর মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়ানোয় সহমত হন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত পুর-এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫২। তাঁদের মধ্যে অ্যাক্টিভ পজ়িটিভের সংখ্যা ৫১। ওইদিনই নতুন করে পাঁচ জন আক্রান্ত হন।
লকডাউন-এ সুফল মিলেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তার ভিত্তি কী?
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের বক্তব্য, সংক্রমণ ‘দ্বিগুন’ হতে কতদিন সময় লাগে, তার হিসেব করেই বলা হয় সংক্রমণ বাড়ছে না কমছে। আংশিক লকডাউন ঘোষণার দু-তিন দিন পরে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছিল, সংক্রমণ দ্বিগুন হতে সময় লাগছিল ১০ দিন। লকডাউন-এর জেরে সেই হারের পরিবর্তন হয়েছে। এখন দেখা গিয়েছে, সংক্রমণ দ্বিগুন হতে সময় লাগছে ১৫ দিন। স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দিন প্রতি গড় আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। আংশিক লকডাউন সংক্রমণের হার কমার অন্যতম কারণ। সে জন্যই লকডাউন-এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’’
কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর দিচ্ছে পুরসভা। স্বাস্থ্য বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকছেন। কোথাও সংক্রমণের খবর মিললে স্বাস্থ্যকর্মীরা যাচ্ছেন। আক্রান্তের বাড়ি ‘সিল’ করা হচ্ছে। তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নিভৃতবাসে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। সব কাজ দেখভালের জন্য পুরসভার প্রশাসক-সহ পদাধিকারীরা পুরসভায় হাজির থাকছেন।
অভয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা সংক্রমণ কমাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’’ সিপিএম কাউন্সিলর সাবিরুদ্দিনের দাবি, ‘‘আংশিক লকডাউন-এর সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক। টেস্টের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। তবেই সংক্রমণ রোধ করা যাবে। সেটা আমি বৈঠকে বলেছি।’’