তৃণমূল পরিচালিত খানাকুলের কিশোরপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের দ্বন্দ্বে পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা অব্যাহত। এ দিকে পরিষেবা না পেয়ে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। দিন কুড়ি ধরে এমন অবস্থা চলায় অবিলম্বে পঞ্চায়েতে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সোমবার বিকালে বিবদমান দু’পক্ষকে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল ব্লক অফিসে। কিন্তু বৈঠকে কোনও পক্ষই হাজির না হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, দিন কুড়ি আগে তাঁর স্বাক্ষর নকল করে উপপ্রধান নানা দুর্নীতি করছেন এই অভিযোগ তুলে দফতরে যাওয়া বন্ধ করেন প্রধান তাপসী বায়েন। মহকুমা শাসক প্রতুল কুমার বসুর কাছে গত মঙ্গলবার উপপ্রধান সন্দীপ বরের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন তিনি। প্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিনই মহকুমাশাসক খানাকুল ১-এর বিডিও গোবিন্দ হালদারকে নির্দেশ দেন দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে পঞ্চায়েত পরিচালনা দ্রুত স্বাভাবিক করতে। আজ, সোমবার সেই বৈঠক ছিল। অন্যদিকে উপপ্রধান সন্দীপ বর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘প্রধানের কাছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের হিসাব চাইতেই অফিস আসা বন্ধ করে তিনি ওইসব কাল্পনিক এবং হাস্যকর অভিযোগ তুলছেন।’’ প্রধানের অভিযোগ, মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জানানোর পর দিন গত ১ জুলাই, বুধবার রাতে তাঁর বাড়ি নিরঞ্জনবাটিতে উপপ্রধানের নেতৃত্বে হামলা হয়। তাঁর বাবা ক্ষুদিরাম বায়েন এবং ভাই গোপাল বায়েনকে মারধর এবং বাড়ির একটি চালায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ নিয়ে থানায় উপপ্রধানের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগও দায়ের করেন থানায়। পাল্টা বৃহস্পতিবার সকালে উপপ্রধানের লোকজন প্রধানের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীদের বাড়িতে হামলা এবং তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে এক কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। এই অবস্থায় গ্রেফতারের ভয়ে কেউই পঞ্চায়েত দফতরে না যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। প্রসঙ্গত, দুজনেই পরস্পরের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, প্রধান এবং উপপ্রধান না থাকায় পঞ্চায়েত থেকে শংসাপত্র-সহ অন্যান্য পরিষেবা মিলছে না। থমকে গিয়েছে স্বচ্ছ ভারত মিশন, ইন্দিরা আবাস যোজনার মতো প্রকল্পের কাজ।
বিডিও গোবিন্দ হালদার বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে এ দিন দু’পক্ষকেই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু প্রধান আসতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। উপপ্রধানও আসেননি। ফলে সমস্যার সমাধান হয়নি।’’ বৈঠকে হাজির না হওয়া নিয়ে প্রধান তাপসী বায়েনের বক্তব্য, ‘‘গ্রেফতারি এড়ানোর জন্য যাইনি।’’ একই কথা বলেন উপপ্রধান সন্দীপ বরও।