নষ্ট হচ্ছে সময়, ক্ষোভ আরামবাগের

দিদিকে ফোন করে সাড়া মিলছে কই!

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর পেরিয়ে গিেয়ছে এক এক মাস। এই পরিষেবা চালুর পর থেকেই বহু মানুষ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে ফোন করেছেন দফতরে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই যেমন চটজলদি সমাধান পেয়েছেন, অনেকে আবার বারবার ফোন করেও সমাধানের কোনও আশ্বাস পাননি। মানুষের এই অভিজ্ঞতার কথা শুনল আনন্দবাজার। গোঘাটের গোয়ালপোতা গ্রামের জালাল খান, অর্পণ খানদের অভিযোগ,  “গত ৫ এবং ৬ অগস্ট গ্রামের বেহাল রাস্তা সংস্কারের কথ বলব বলে ফোন করেছিলাম।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

ফাইল চিত্র।

‘মমতা দিদির অফিসে ফোন করার জন্য ধন্যবাদ। লাইনে থাকুন। আপনার সময় আমাদের কাছে খুব মূল্যবান। আমরা শীঘ্রই আপনাকে সাহায্য করব।’– ‘দিদিকে বলো’তে মিনিট দশেক ধরে ফোন করে রেকর্ডিং করা এইটুকুই পাওনা বলে অধিকাংশ মানুষের অভিযোগ।

Advertisement

গোঘাটের গোয়ালপোতা গ্রামের জালাল খান, অর্পণ খানদের অভিযোগ, “গত ৫ এবং ৬ অগস্ট গ্রামের বেহাল রাস্তা সংস্কারের কথ বলব বলে ফোন করেছিলাম। দু’দিনই রেকর্ডিং করা ওই কথাগুলি বলা হল। পরে একজন নাম, পেশা, রাজনৈতিক দল ইত্যাদি জানতে চাইল। শেষে বলা হল আপনার ফোনটি নথিভুক্ত করা হল। কিন্তু সমস্যার কথা শুনতেই চাইল না কেউ।’’ ‘দিদিকে বলো’তে সাড়া না পাওয়ার প্রতিবাদেই গত ৮ অগস্ট গ্রামবাসীরা গোঘাটের কোটা থেকে ভিকদাস পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তায় ধান পুঁতে ও মাছ ছেড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।

এরকম প্রতিবাদ কোথাও না হলেও ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করে একই অভিজ্ঞতা আরামবাগ মহকুমার অনেক মানুষের। পুরসভার ব্যবসায়ী তথা তৃণমূল সক্রিয় কর্মী চিন্ময় ঘোষের অভিযোগ, “দলের কয়েকজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে চাইছি সরাসরি দিদির কছে। কিন্তু যতবারই ফোন করি মিনিট দশেক করে সময় নষ্ট হয় রেকর্ডিং শুনে। শেষে বলা হয় আপনার ফোন নথিভুক্ত করা হল।”

Advertisement

একই অভিজ্ঞতা পুরশুড়ার মির্জাপুরের সাধারণ গ্রামবাসী অনিল মণ্ডলের। অনিলবাবুর অভিযোগ, দিন সাতেক গ্রাম সংলগ্ন দামোদর নদের বাঁধ এবং রাস্তা সংস্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগ না শুনেই বলা হল, আপনার ফোন কল নথিভুক্ত করা হল। আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সেই যোগাযোগ কবে হবে, কে করবেন কিছুই বুঝতে পারছি না”।

খানাকুলের পিলখাঁ, নতিবপুর, মাড়োখানা-সহ মহকুমার অনেক মানুষ আবার অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা হুমকি দিয়েছেন ‘দিদিকে বলো’তে কোন অভিযোগ করা যাবে না। কারা অভিযোগ করছেন, তাঁদের নাম ঠিকানা জেনে মারধরের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

‘দিদিকে বলো’ তে অভিযোগ জানানো প্রসঙ্গে গোঘাট বিধায়ক মানস মজুমদার ও আরামবাগ বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “আমরা তো প্রতিটি এলাকায় ঘুরে প্রচার করছি ‘দিদিকে বলো’তে অভিযোগ জানাতে। নিজেরাই অভিযোগ শুনছি। আমাদের পক্ষে সমাধান সম্ভব হলে করছি। বাকিগুলি সরাসরি দিদিকেই বলতে বলা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement