—ফাইল চিত্র।
গ্রামোন্নয়নের কাজে গতি আনতে প্রায় চার মাস পরে, আগামী ২৬ জুন বৈঠক ডাকলেন হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য। প্রস্তাবিত বৈঠকে ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করে পঞ্চায়েতগুলিতে লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
প্রতি মাসে এই বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বৈঠক বন্ধ ছিল। ২৩ মে ভোটের ফল প্রকাশিত হয়। নির্বাচনী বিধিনিষেধ উঠে যায় ২৭ মে। তারপরেও এতদিন বৈঠক হয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ভোটের পরে জেলাশাসক-সহ অনেক আধিকারিক বদলি হয়েছেন। উন্নয়নমূলক কাজের তদারকি করতে হলে আধিকারিকদের বিশেষ ‘টিম’ তৈরি করতে হয়। তাতেও কিছুটা সময় লেগেছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ২৬ তারিখের বৈঠকের পরে প্রতি ব্লকে বৈঠক হবে। তাতে পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং সদস্যেরা থাকবেন। উন্নয়নমূলক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য সবাইকে বলা হবে।
জেলায় কোনও বৈঠক না-হওয়ায় পঞ্চায়েতের কাজে একটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছিল। কয়েকটি ব্লকে বিডিও-রা পঞ্চায়েতের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলেও তাতে মূলত আলোচনা হয়েছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প নিয়ে। এই প্রকল্পে কিছু নতুন নিয়ম আসছে, বিডিও-রা সেগুলিই পঞ্চায়েতের কর্তাদের বোঝান। কিন্তু চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা, তৃতীয় রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকা, বাংলা আবাস যোজনা প্রভৃতি প্রকল্পে সময়ে কাজ করাতে গেলে পঞ্চায়েতের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তাদের একটা সমন্বয় দরকার হয়। প্রায় চার মাস জেলা বা ব্লকে কোনও বৈঠক না-হওয়ায় সেই সমন্বয়ের অভাব বেশ প্রকট হয়েছে জেলা জুড়েই।
বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা পড়ে রয়েছে। সেই টাকা সময়ে খরচ না-হলে নির্দিষ্ট শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) মিলবে না। তাতে পরবর্তী কিস্তির টাকা পেতে দেরি হবে। সামগ্রিক ভাবে উন্নয়নমূলক কাজ পিছিয়ে যাবে। শুধু তা-ই নয়, লোকসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, বহু পঞ্চায়েতে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে এগিয়ে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে জেলার একাধিক পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে পদাধিকারিরা আসছেন না। পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েত কার্যালয়গুলি কার্যত ফাঁকা থাকছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রশাসনিক বৈঠক ডেকে পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে কাজে নেমে না-পড়লে উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে বলে তৃণমূলের একাধিক পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীরাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা একাধিকবার জেলা প্রশাসনের কাছে বৈঠক ডাকার জন্য আবেদনও করেছিলেন বলে জানান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্তের ফলে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গিয়েছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।