জগৎবল্লভপুরের ফটিকগাছির বাসিন্দা সঞ্জীব বেলেন পেশায় দিনমজুর। তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে কিডনির সমস্যায় ভুগছিল। ছেলের অসুখের ব্যয়বহুল চিকিৎসা কীভাবে করাবেন ভেবে দিশাহারা হয়ে পড়েন সঞ্জীব। ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করার তিনদিনের মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে। দিদির প্রতি কৃতজ্ঞ সঞ্জীব বলেন, ‘‘ভাবতে পারিনি এইভাবে কাজ হওয়া সম্ভব।’’
পাঁচলা বিধানসভার বিধায়ক গুলশান মল্লিক বলেন, ‘‘আমরা যখন ‘দিদিকে বলো’র জন্য প্রচার করছি, তখন অনেকে অপপ্রচার করছেন, কটূক্তি করছেন। কিন্তু সঞ্জীব বেলেলের ঘটনা সমালোচকদের মুখের মতো জবাব দিয়েছে।’’
অন্যদিকে দিদিকে বলো-র দফতর থেকেই বেহাল দশায় পড়ে থাকা রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস পেয়েছেন রসপুরের বাসিন্দা অত্রিক দাস।
আমতা থানার সামনে থেকে রসপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার দীর্ঘদিন ধরে শোচনীয় দশা। দামোদরের বাঁধের উপরে তৈরি এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ আমতা শহরে আসেন, কয়েকশো বাইক, গাড়ি ও ট্রেকার চলাচল করে। কিন্তু মেরামতির অভাবে রাস্তার বহু জায়গায় পিচ উঠে গর্ত হয়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। স্থানীয় মানুষ বহুবার আবেদন জানালেও সংস্কার হয়নি। দিন ১৫ আগে ‘দিদিকে বলো’র নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করেন স্থানীয় বাসিন্দা অত্রিক। প্রথমবারেই যোগাযোগ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফের যোগাযোগ করা হবে। কিন্তু তার আগেই আমাকে ফোন করে রাস্তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এবং ছবি চাওয়া হয়। সেটা দেওয়ার পর আবার আমাকে ফোন করে জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।
এই রাস্তাটি ২০০৩ সালে সেচ দফতর তৈরি করেছিল। পরে জেলা পরিষদ তা সংস্কার করে। তারপর আর সংস্কার হয়নি। অত্রিকের আশা এবার কাজ হবে।
এলাকার বিধায়ক তথা শ্রম দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী নির্মল মাজি বলেন, ‘‘আগেই এই রাস্তা সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবে ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করায় এই কাজ আরও দ্রুত শুরু হবে বলে খবর পেয়েছি। আমরা চাই মানুষ এইভাবে সরাসরি তাঁদের অভিযোগ জানাক। আমরা গ্রামে ঘুরে এই কথা প্রচারও করছি।’’
সাঁকরাইল এর অনন্ত পাত্রের অভিজ্ঞতা অবশ্য ভিন্ন। রঘুদেববাটি অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী অনন্তবাবু দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে কিছু অভিযোগ জানানোর জন্য ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘‘দিদিকে বলো’তে ফোন করে আমি জানাই, দলের সাংগঠনিক কিছু সমস্যার কথা দিদিকে বলতে চাই। আমাকে বলা হয় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। কিন্তু পাল্টা ফোন আসেনি। এরপর আমি আরও কয়েকবার ফোন করেছি। প্রতিবার আমাকে বলা হয়েছে, আমার নাম নথিভুক্ত হয়েছে এবং আমাকে ফোন করা হবে। কিন্তু ফোন আসেনি।’’ যদিও তিনি মনে করেন, অনেকেই সরাসরি সর্বোচ্চ মহলে যোগাযোগ করে উপকার পাচ্ছেন, এটা
বড় বিষয়।