প্রতীকী ছবি।
বাকি মাত্র তিন দিন। তারপরেই ফুরোবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা। পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভবিক না-হওয়ায় হুগলির বহু চালক এখনও জেলা পরিবহণ দফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলিতে গিয়ে লাইসেন্স নবীকরণ করাতে পারেননি। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, লাইসেন্সের মেয়াদ ফুরবার পরে কি আদৌ তাঁরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরতে পারবেন। উত্তর জানা নেই। এখনও লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা বাড়ানোর কোনও বিজ্ঞপ্তি রাজ্য পরিবহণ দফতর জারি করেনি।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা রাজ্য সরকার না-বাড়ানোয় বিপাকে পড়েছেন বহু চালক। চলতি মাসের ৩০ তারিখ শংসাপত্র নবীকরণের শেষদিন। ট্রাক ওনারর্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, রাজ্য সরকার সময়সীমা না-বাড়ানোয় হগলিতে অন্তত ৫০ হাজার গাড়ির চালক বিপাকে পড়েছেন।
লোকাল বা দূরপাল্লার ট্রেন এখনও চালু হয়নি। বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি। করোনা-পরিস্থিতিতে পরিবহণ দফতরের প্রায় সকল আঞ্চলিক কার্যালয়েই কাজ হচ্ছে অল্প কয়েকজনের উপস্থিতিতে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, হুগলিতে চারটি অঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের (আরটিও) কার্যালয় চলছে হাতে গোনা কর্মী দিয়ে। সব মিলিয়ে সমস্যা খুবই জটিল। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া বা নবীকরণের কাজে গতি একপ্রকার নেই বললেই চলে। ফলে, অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স নবীকরণের কাজ করে উঠতে পারেননি। লকডাউন চলাকালীন ট্রাকচালকদের একাংশ ভিন্ রাজ্যে যে যার ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। তাঁরা ফিরে আসেননি। বহু গাড়িচালকের বক্তব্য, রাজ্য সরকার লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা না-বাড়ালে তাঁরা বিপাকে পড়বেন।
জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন,‘‘অনেক রাজ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও সে রকম কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। আশা করছি, রাজ্য সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে। না-হলে বহু মানুষ সমস্যায় পড়বেন।’’
হুগলি জেলা ট্রাক ওনারর্স অ্যাসোশিয়েসনের সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের সংগঠনের তরফে সমস্যার কথা জানিয়েছি। পরিবহণমন্ত্রী ও পরিবহণ সচিব থেকে শুরু করে হুগলির জেলাশাসক— সকলকেই বিষয়টি জানিয়েছি। ট্রেন পরিষেবা চালু না-হওয়ায় অনেক ট্রাকচালক বিহার, উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্য রাজ্য থেকে ফিরতে পারেননি। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা না-বাড়ালে চালকদের পাশাপাশি পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলেই সমস্যায় পড়বেন। বহু টাকা জরিমানা দিতে হবে চালকদের। একেই তাঁদের আয় বলতে তেমন কিছু নেই। তার উপর জরিমানা দিতে হলে, তাঁরা খাবেন কী?’’
ট্রাক ওনারর্স অ্যাসোশিয়েসনের সহ-সম্পাদক পিন্টু সেন বলেন,‘‘ শুধু মাত্র হুগলিতেই ট্রাক ও ছোট গাড়ি মিলিয়ে অন্তত ৫০ হাজার চালক রয়েছেন। রাজ্য সরকার যদি কেন্দ্রের মতো শংসাপত্রের সময়সীমা না বাড়ায়, সে ক্ষেত্রে প্রতি চালককে এক হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘করোনা-পরিস্থিতির জেরে এখন ভাড়া কমে গিয়েছে। এক জন ছোট গাড়ির চালক সারাদিন গাড়ি চালিয়ে ৪০০ টাকা পান। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবীকরণের সময়সীমা বাড়ানো উচিত সরকারের।’’