প্রস্তুতি: পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় অটোতে বসেই বইয়ে চোখ বোলােনা। উলুবেড়িয়ায় ছবিটি তুলেছেন সুব্রত জানা।
অবশেষে দুর্ভোগের ছবিটা বদলাল।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হুগলি জেলার বিভিন্ন অংশে যানজট নিত্যদিনের যন্ত্রণার কারণ হয়ে গিয়েছিল। মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছিল ডানকুনি হাউজ়িং মোড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও গাড়ি তেমন নড়ছিল না। মঙ্গলবার সকালে অবশ্য যানজট উধাও। সৌজন্যে— মাধ্যমিক পরীক্ষা।
এ দিন থেকেই ওই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, পুলিশের কাছে সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। চিন্তায় ছিলেন অভিভাবকেরাও। প্রথম দিন অবশ্য পুলিশ চ্যালেঞ্জ উতরে গিয়েছে। ডানকুনি হাউজ়িং মোড়-সহ সর্বত্রই নির্বিঘ্নে গাড়ি চলেছে। দেখা যায়নি যানজটে গাড়ির লম্বা লাইন। সকাল থেকেই রাস্তায় পুলিশ ছিল। পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। চন্দননগর কমিশনারেটের তরফে ডানকুনিতে এ জন্য ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেওয়া হয়। ওই মোড় দিয়ে সকাল ৮ থেকে ১০টা পর্যন্ত পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
কমিশনারেট সূত্রের খবর, হুগলিতে একই সঙ্গে একাধিক সেতুর কাজ চলছে। তার উপর কলকাতার টালা সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বালির মাইতি পাড়া থেকে কলকাতামুখী গাড়ির গতি কমে যাচ্ছিল। ফলে, যানজট হচ্ছে। রাতের জট অনেক সময় পরের দিন সকাল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হচ্ছিল। তাই সোমবার রাত থেকেই ডানকুনির দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, কালীপুর মোড়, টি এন মুখোপাধ্যায় রোড এবং দিল্লি রোডের ক্রসিং, সিঙ্গুরের আলুর মোড়, ধনেখালির মহেশ্বরপুরে পুলিশ সতর্ক ছিল। বালিখাল থেকে উত্তরপাড়ামুখী একটি যানজটও দীর্ঘদিন এলাকার মানুষকে ভোগাচ্ছে। সেই যানজটও মঙ্গলবার চোখে পড়েনি।
নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পেরে হাঁফ ছেড়েছে পরীক্ষার্থীরা। স্বস্তিতে অভিভাবকেরাও। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘পুলিশ সচেতন ছিল। গাড়ি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা যথাযথ হওয়ায় সমস্যা হয়নি। পরীক্ষার দিনগুলিতে এই ব্যবস্থা জারি থাকবে।’’
তৃণমূলের তরফে এ দিন নানা জায়গায় পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর হিড়িক দেখা গিয়েছে। খানাকুল, আরামবাগ, গোঘাট এবং পুরশুড়ায় বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র ঢোকার আগে পরীক্ষার্থীদের হাতে পেন, বোর্ড, জলের বোতল দেওয়া হয়। আরামবাগ বাস্ট্যান্ডে জলসত্রও ছিল। প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ি এবং মোটরবাইক নিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। এ বারেও উত্তরপাড়া পুর এলাকার ছ’টি পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা অন্তত ১৯০০ পরীক্ষার্থীর হাতে শুভেচ্ছাপত্র এবং ক্যাডবেরি পৌঁছে দেন পুরপ্রধান দিলীপ যাদব।
এর মধ্যেই পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে আরামবাগের তেলুয়া শিক্ষা নিকেতনের এক পরীক্ষার্থী সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়। শিউলি সাহা নামে ওই ছাত্রীকে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সেন্টার-ইনচার্জকে বিষয়টি জানিয়ে হাসপাতালেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।