হতাশা: শ্রমিক মহল্লায় বিষণ্ণতা। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
দেড় বছরের উপর বন্ধ চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল। তবে, জরুরি কাজের জন্য অল্প কিছু কর্মীকে দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চালু রাখা হয়েছে। কিন্তু কাজ করেও গত চার মাস ধরে বেতন মিলছে না, এই অভিযোগে বুধবার মিলের কমার্শিয়াল ম্যানেজার হেমন্তকুমার সুলতানিকে ঘেরাও করলেন ওই বিভাগের শ্রমিকেরা। ঘণ্টা দু’য়েক ঘেরাও চলে। গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ আসে। পরে ওই মিলকর্তা শ্রমিকদের আশ্বাস দেন, বেতনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। এর পরেই ঘেরাও ওঠে।
জুটমিল সূত্রের খবর, রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগে প্রায় ৭০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ দারোয়ান, কেউ সাফাইকর্মী। কেউ আবার বিদ্যুৎ বা কলের মিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁদের অভিযোগ, চার মাস বেতন না-মেলায় তাঁরা সংসার চালাতে পারছেন না। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ঘেরাও শুরু হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের মজুরি কমিয়ে দৈনিক ৩৭০ টাকা দেওয়া হবে। শ্রমিকেরা তা মানতে চাইছেন না। অবিলম্বে বকেযা টাকা মেটানো এবং পুরনো হারে বেতনের দাবি জানান তাঁরা।
সুরেশ ধানুকা নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘কর্মাশিয়াল ম্যানেজার জানিয়েছেন, দু’দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন। অবিলম্বে বকেয়া বেতন মেটানো না হলে এবং সমহারে বেতন না দেওয়া হলে ফের ঘেরাও করা হবে।’’ বিনোদ ধানুকা নামে অার এক শ্রমিক বলেন, ‘‘চার মাস বেতন পাইনি। এখন বলছে ৩৭০ টাকা রোজে কাজ করতে হবে। এত কম টাকায় সংসার চালাব কী করে? মুদি দোকানে টাকা বাকি। কেউ ধার দিচ্ছেন না।’’ এক শ্রমিক পরিবারের চন্দ্রাবতী ধানুকা নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘ ‘যা পরিস্থিতি তাতে এ বার বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে।’’
মিলের কর্মী তথা পিএফ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রাজেশ জয়সোয়ারা বলেন, ‘‘গত ১১ ফেব্রুয়ারি আমরা মিল খোলার আর্জি নিয়ে রাজ্য সরকারের শ্রম দফতরে কথা বলি। তখনই রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের শ্রমিকদের বেতনের বিষয়টি তাদের জানাই। শ্রম দফতরের তরফে এই ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও বেতন দেওয়া হচ্ছে না।’’ চেষ্টা করেও মিল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।