মেরামতি: পুরশুড়ায় সামন্ত রোড সেতুর সংস্কার কাজ চলছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
বয়স ৫০ পেরিয়েছে। এ বার প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছনো সেতু-কালভার্টগুলির স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিল পূর্ত দফতর।নদ-নদী এবং খালে ঘেরা আরামবাগ মহকুমায় এমন বহু সেতু এবং কালভার্ট রয়েছে, যেগুলির বয়স ৫০ বছর পেরিয়েছে। পূর্ত দফতরের নির্মাণ ২ বিভাগের অধীনে পুরশুড়ার সামন্ত রোড থেকে খানাকুলের রাধানগর যাওয়ার রাস্তায় এমনই ৬টি ছোট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হল।
জেলা পূর্ত দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিমাইচন্দ্র পাল বলেন, “ওই রাস্তায় ১০টি ছোট সেতুর সংস্কার প্রয়োজন। সেগুলির মধ্যে ৬টির সংস্কার দ্রুত গতিতে চলছে। পুজোর আগেই শেষ হবে। বাকি ৪টির সংস্কার পুজোর পরে শুরু হবে।” এর আগে পূর্ত দফতরের(নির্মাণ-২) অধীনে ধরমপোতা থেকে গড়েরঘাট, মায়াপুর যাওয়ার রাস্তায় দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরীর বিভিন্ন শাখার উপরে ২৫টি সেতু এবং ৫টি কালভার্টের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।পুরশুড়ার দিগরুইঘাটে মুণ্ডেশ্বরীর উপরে একটি বড় সেতু ছাড়া মহকুমার অধিকাংশ সেতু এবং কালভার্ট নির্মাণ হয়েছিল ১৯৬৫-’৭৭ সালের মধ্যে। দিগরুইঘাটের সেতুটি বাদে ৯৭টি ছোট-বড় সেতু এবং কালভার্টের আশু সংস্কার প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন পূর্ত দফতরের এক কর্তা। সেই কাজে হাত দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে জেলা এবং রাজ্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছিল পূর্ত দফতর। সেতুগুলির হাল কেমন?
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, কোনও সেতুর ‘এক্সপ্যানশন’ জয়েন্টে ফাঁক রয়েছে। কোনটির আবার ‘অ্যাপ্রোচ স্ল্যাব’ বসে গিয়েছে। কোথাও দেখা গিয়েছে সেতুর ‘বেড স্ল্যাব’ ভাঙা। কোথাও কোথাও সেতুর মূল স্ল্যাব থেকে অ্যাপ্রোচ স্ল্যাব সরে গিয়েছে। পিলারের রড বেরিয়ে গিয়েছে কোনও কোনও সেতু বা কালভার্টের। পূর্ত নির্মাণ-১ বিভাগের অধীনে থাকা বড় তিনটি সেতুর মধ্যে পুরশুড়া থেকে চাঁপাডাঙার মাঝে দামোদরের উপরে বিদ্যাসাগর সেতুটির অবস্থা তুলনামূলক ভাবে ভাল। বাকি দু’টির (আরামবাগের হরিণখোলায় মুণ্ডেশ্বরীর উপরে রামমোহন সেতু এবং আরামবাগেরই ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পল্লিশ্রীতে দ্বারকেশ্বরের উপরে রামকৃষ্ণ সেতু) ধারাবাহিক ভাবে সংস্কার হচ্ছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে রামকৃষ্ণ সেতু। সেখানে বিকল্প সেতু নির্মাণের প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে পূর্ত দফতরের থেকে। বিকল্প সেতুর জন্য মাটি পরীক্ষা হয়েছে। কয়েক দফা জমি জরিপের কাজও হয়েছে। মহকুমা পূর্ত দফতরের নির্মাণ-১ বিভাগের সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় বলেন, “রামকৃষ্ণ সেতু সংস্কারের কাজ চলছে। আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর যাওয়ার রাস্তাটি চার লেন করা হবে। তখনই বাকি দু’টি সেতু নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”