Coronavirus in Howrah and Hooghly

চুঁচুড়াতেও সংক্রমণ বৃদ্ধি, পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে পঞ্চাশেরও বেশি সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৬:০৩
Share:

সংক্রমণ রুখতে ব্যান্ডেলের বিভিন্ন এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। ছবি: তাপস ঘোষ

চন্দননগর, উত্তরপাড়ার পরে হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়াতেও করোনা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে পঞ্চাশেরও বেশি সংক্রমিতের খোঁজ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে কাপড়ের দোকানের মালিক, লজ-মালিক, আইনজীবীও রয়েছেন। চুঁচুড়া পুলিশ-ব্যারাকেরও দু’জন সংক্রমিত হয়েছেন। ইতিমধ্যে একটি ব্যাঙ্ক এবং মাছের আড়ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু সামান্য দু’একটি পদক্ষেপ ছাড়া পুরসভাকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিক ভাবে নামতে দেখা যাচ্ছে না বলে অনেক শহরবাসীরই অভিযোগ। সম্প্রতি পুরসভায় নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগকে ঘিরে শহরে হইচই হয়। তারপর থেকেই পুর প্রশাসন গুটিয়ে রয়েছে বলেও দাবি করেছেন অনেকে।

Advertisement

চেয়েও পুরসভা থেকে অ্যাম্বুল্যান্স মিলছে না, এ অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বনানী সাহার অভিযোগ, ‘‘ক’দিন আগে বাড়ির একজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমি চেয়েও পুরসভা থেকে অ্যাম্বুল্যান্স পাইনি।’’ শহরের চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, সংক্রমিতেরা বহু লোকের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারেন। তাই যাঁরা ইতিমধ্যেই তাঁদের কাছাকাছি এসেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে সতর্কতার জন্য নিভৃতবাসে পাঠানো উচিত পুরসভার। পুরসভা লাগোয়া মিটিং হলে আশ্রয় নেওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের করোনা পরীক্ষারও দাবি উঠেছে।

সমস্যা যে জটিল হচ্ছে, মানছেন পুর প্রশাসনের পরিচালন কমিটির সদস্য তথা বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান অমিত রায়। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডে জীবানুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। সংক্রমণ রুখতে আমরা দমকলের সাহায্যে রাস্তা ধোয়ার কাজও করছি। আরও কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মানুষ প্রয়োজনে পুরসভার হেল্প-ডেক্সে ফোন করলেই পরিষেবা পাবেন। পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স-চালকদের স্বাস্থ্য-বিমা রয়েছে। পরিষেবা না-মেলার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নেব।’’

চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড় এমন একটি জায়গা, ঐতিহ্যগত ভাবে যেখানে সারা বছর সব দলেরই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে। জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনারের অফিস কাছেই। তাই প্রতিটি রাজনৈতিক দলই তাঁদের নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে জেলার পদস্থ কর্তাদের স্মারকলিপি দিতে আসেন। কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হন ঘড়ির মোড়ে। তবে, শহররাসী এখন আর কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি চাইছেন না। তাঁরা মনে করছেন, এতে সংক্রমণ বহু গুণ বেড়ে যাবে।

শহরের এক প্রবীণ শিক্ষক বলেন, ‘‘এই রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে একমাত্র অবলম্বন সতর্কতা। তাই সব মানুষেরই উচিত সহ-নাগরিকের দিকে তাকিয়ে নিজেকেও সাবধানে রাখা।’’

শাসকদলের এক প্রবীণ নেতা মানছেন, সম্প্রতি ১৯ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁরা দু’টি কর্মসূচি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো তখন জানতাম না শহরের এই পরিস্থিতি। আপাতত সব বন্ধ। আমরা যে হেতু প্রশাসনে আছি, আমাদের আগে দায়িত্বশীল হতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement