বেহাল রাস্তা নিয়ে বৈঠক চলছে চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতরে। নিজস্ব চিত্র।
কোনও রাস্তার কার্যত কঙ্কাল বেরিয়ে গিয়েছে। খানাখন্দে জল জমে কোনও রাস্তা পুকুরের চেহারা নিয়েছে। হুগলির বিভিন্ন প্রান্তে এমন রাস্তার সংখ্যা কম নয়। তা নিয়ে সাধারণ মানুষের বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। ওই সব বেহাল রাস্তা দ্রুত সংস্কারে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। দুর্গাপুজোর আগেই যতটা সম্ভব কাজ সেরে ফেলতে চাইছে তারা।
বুধবার বেহাল রাস্তা নিয়ে বৈঠক হয় চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতরে। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রলয় মজুমদার, জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান, ওই দফতরের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। রাজ্য হাইওয়ে বিভাগ, পূর্ত দফতর, জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার, বন দফতরের আধিকারিকও ছিলেন। মহকুমাশাসক, বিডিও, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল অবস্থার কথা সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে। ওই রাস্তাগুলি ধরে ধরে আলোচনা করা হয়। জোরকদমে কাজের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে যাতে সব রাস্তা তৈরি হয়ে যায়, সেই লক্ষ্যে জরুরিকালীন ভিত্তিতে কাজ করতে বলা হয়েছে। কোথাও সমস্যা থাকলে প্রশাসনের তরফে অকুস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে জট কাটানোর চেষ্টা করা হবে।’’
কোন্নগর স্টেশন থেকে দিল্লি রোডের সংযোগকারী নৈটি রোড দীর্ঘদিন বেহাল। প্রশাসন সূত্রের দাবি, ঠিকাদারকে বরাত দেওয়া হয়ে গেলেও রাস্তাটির কাজ শুরুতে কেন ঢিলেমি, তা নিয়ে বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে। ঠিক হয়েছে, শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী ওই রাস্তা পরিদর্শন করবেন। অবিলম্বে কাজ শুরু করা হবে।
শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুর থেকে সিঙ্গুরের বড়া যাওয়ার রাস্তার সংস্কারের কাজ শেষ হতে না হতেই কিছু জায়গা ভেঙে গিয়েছে। জলের পাইপ ফেটেই বিপত্তি বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের দাবি। ঠিক হয়েছে, আগামী মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসবেন। কালভার্ট তৈরির জন্য পিয়ারাপুর থেকে নওগাঁ পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ। প্রশাসন সূত্রের দাবি, ওই কাজ শেষ হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসক রাস্তাটি পরিদর্শন করবেন। তার পরেই বাস চালুর ছাড়পত্র মিলতে পারে।
খানাকুলের মুচিঘাটা সেতু, তারকেশ্বরের বিনোগ্রামে সেচ দফতরের জমিতে থমকে থাকা রাস্তা নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়। বিডিও-দের তরফে আরও কিছু বেহাল রাস্তার কথা তুলে ধরা হয়। মগরার ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর কাজ চলায় সেখান দিয়ে বড় গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। জেলাশাসকের নেতৃত্বে শীঘ্রই ওই সেতুটি পরিদর্শন করা হবে বলে বৈঠকে ঠিক হয়েছে। সুবীরবাবু জানান, বর্ষায় বিটুমিনের কাজ করা অসুবিধার। এই সময় অন্যান্য কাজ যথাসম্ভব সেরে ফেলা হবে। বর্ষা বিদায় নিলে সর্বোচ্চ গতিতে কাজ করতে হবে। রাজ্যে ১১৭টি রাস্তার তালিকা পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের অনুমোদন পেলে সেগুলির কাজেও হাত দেওয়া হবে।