মাধ্যমিকের পরে উচ্চ মাধ্যমিক, দুই পরীক্ষাতেই হুগলির ছাত্রছাত্রীদের জয়জয়কার। উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় এই জেলারই ১১ জন। এদের মধ্যে পাঁচ জনই ছাত্রী এবং রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারীও রয়েছে।
আরামবাগ গার্লস হাইস্কুলের কলা বিভাগের ছাত্রী নীলাঞ্জনা সাহা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৯০ নম্বর পেয়ে মেয়েদের মধ্যে প্রথম আর সার্বিকভাবে তৃতীয়। পান্ডুয়ার খন্যান ইটাচুনা শ্রীনারায়ণ ইনস্টিটিউশনের ছাত্র দীপ্তেশ লালা ৪৮৯ নম্বর পেয়ে চতুর্থ স্থানে। বাবা দিলীপবাবু কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। মা মিঠুদেবী শিক্ষিকা। কর্মসূত্রে দুজনেই সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকেন। বলতে গেলে দিদিমার কাছেই বড় হওয়া দীপ্তেশ চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে গবেষক হতে চায়। দীপ্তেশের থেকে ১ নম্বর কম পেয়ে উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাল্য ব্রহ্ম পঞ্চম স্থানে। নির্মাল্যর বাড়ি উত্তরপাড়ার মাখলার চড়কতলায়। বাবা, রাজ্য সরকারের কর্মী দিলীপবাবু জানান, পরীক্ষার আগে ছেলে দিনে ঘণ্টা ছ’য়েক পড়াশোনা করেছে। অবসর সময়ে গানের ভক্ত নির্মাল্য ভবিষ্যতে ফলিত পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক।
বাড়ি কোচবিহারের নাটাবাড়িতে হলেও উচ্চশিক্ষার জন্য হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা তহমিনা খাতুন-এর। তারকেশ্বরের ক্ষুদ্ররামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীটি ৪৮৭ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে। বাবা আয়ুব আলি মিঞা চাষবাস করেন। ৪৮৫ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকার অষ্টম স্থানে হুগলিরই তিন জন। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের তন্ময় কুমার, মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের সব্যসাচী বসুরায় এবং হিন্দমোটর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী কৃষ্ণা মিশ্র। উত্তরপাড়া লরেন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা সব্যসাচীর কথায়, ‘‘৯০ শতাংশের উপর নম্বর পাব ভেবেছিলাম। তবে মেধা তালিকায় থাকব, ভাবতে পারিনি।’’ বাবা স্বপনবাবু রাজ্য সরকারি কর্মচারি। মা স্বপ্নাদেবী গৃহবধূ। অঙ্ক নিয়ে গবেষণা করতে চায় সব্যসাচী। তবে দিন-রাত বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে রাখতে চায়নি সে। সময় পেলেই বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে নেমে পড়েছে মাঠে। মেধা তালিকায় সপ্তম স্থান পাওয়া হিন্দমোটর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী কৃষ্ণা মিশ্র পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকতে ভালবাসে।
চন্দননগরের কৃষ্ণভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দিরের সমন্বিতা ঘোষ, শ্রী অরবিন্দ বিদ্যামন্দিরের অর্ক শীল ও উত্তরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সঙ্গীতা ঝা—তিনজনেই মেধা তালিকায় নবম স্থানে। তিনজনেই পেয়েছে ৪৮৪ নম্বর। সমন্বিতা চিকিৎসক হতে চায়। অর্ক চায় রসায়ন নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে। কোন্নগরের নবগ্রামের সঙ্গীতা গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা। আরামবাগ বয়েজ স্কুলের ছাত্র সুমন নন্দী ৪৮৩ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় দশম স্থানে। বাড়ি আরামবাগের রবীন্দ্রপল্লিতে। ক্রিকেটের ভক্ত সুমন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
চিকিৎসক হতে চায় হাওড়া বাগনানের মুগকল্যাণ হাইস্কুলের ছাত্রী মোহনা দাস। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮৭ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় সে ষষ্ঠ স্থানে। বরাবরই মেধাবী মোহনা ভালবাসে বিভিন্ন ধরনের গল্পের বই পড়তে। এছাড়া ভ্রমণ ও অন্যান্য বিষয়ে লেখাও পড়তে পছন্দ করে। ডিসকভারি চ্যানেলের নিয়মিত দর্শক মোহনা টিভিতে সংবাদের ভক্ত।