বায়ুসেনার বিমানের পাশে দাঁড়িয়ে শীতল মান্না। করোনায় মৃত্যু হয়েছে বায়ুসেনার প্রাক্তন ওই কর্মীর। তাঁর পারিবার সূত্রে পাওয়া ছবি।
করোনায় মৃত্যু হল আন্দুলের বাসিন্দা প্রাক্তন সেনাকর্মী শীতল মান্নার। বয়স হয়েছিল ৮৫। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি গত ১ সেপ্টেম্বর জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে লালারস পরীক্ষায় তাঁর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ৫ সেপ্টেম্বর ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
শীতলবাবু বায়ুসেনার প্রাক্তন কর্মী ছিলেন। মাত্র ১৮ বছর ব।সে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। নয় বছর বায়ুসেনার সদস্য ছিলেন। চাকরি ছাড়ার পরে ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
শীতলবাবুর পুত্রবধূ সোনালিদেবী বলেন, ‘‘শ্বশুরের থেকে অনেক গল্প শুনেছি। উনি বায়ুসেনার মেকানিক বিভাগে কাজ করেছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বায়ুসেনার যে বিমানে যাতায়াত করতেন, তার মেকানিক ছিলেন শ্বশুর। জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে ছবিও আছে ওঁর।’’ বছর দশেক আগে শীতলবাবু পরিবারের সকলকে নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন। সোনালি বলেন, ‘‘বায়ুসেনার সংগ্রহশালায় সেই বিমানকে দেখে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন। স্মৃতিচারণ করেন পুরনো দিনগুলির। ১৯৬২-র ভারত-চিনের যুদ্ধে বহু সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন। তখন ওঁর মা ছেলেকে বাড়ি ফিরতে বলেন। মায়ের ইচ্ছায় চাকরি ছেড়ে ঘরে ফিরেছিলেন।’’
শীতলবাবুর স্ত্রী সমিতাদেবী বলেন, ‘‘চাকরি জীবনের অনেক গল্প উনি আমাদের শুনিয়েছেন। বলতেন, জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে সফর করেছেন উনি। আর সে সব গল্প শুনতে পাব না।’’ শীতলবাবুর মেয়ে অঞ্জনা পাত্র বলেন, ‘‘মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে বাবা-মায়ের ৫৪ তম বিবাহবার্ষিকী পালন হয়। সে দিন নাতি-নাতনি, ছেলে-মেয়ে ও পুত্রবধূদের নিয়ে বাবা খুব আনন্দ করেছিলেন। নাতি-নাতনিদের জওহরলাল নেহরুর কথা বলতেন।’’