ব্যবস্থা: মাটি কেটে জল বের করা হচ্ছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
রোগ মোকাবিলায় কৃষি দফতর পরামর্শ দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলুর নাবিধসা রোগ কতটা ঠেকানো যাবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হুগলি জোর চাষিরা।
এমনিতেই এ বার বিক্ষিপ্ত ভাবে ওই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় কয়েকবার বৃষ্টিতে রোগের প্রকোপ আরও বাড়বে বলে চাষিদের আশঙ্কা। বৃষ্টির পর রোদ উঠলে, সেই ভ্যাপসা আবহাওয়াই ছত্রাকঘটিত ওই রোগ আরও বাড়াবে বলে কৃষি দফতরও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ দিনের বৃষ্টির সঙ্গে গোঘাটের কামারপুকুর, খানাকুলের তাঁতিশাল-সহ কয়েক জায়গায় শিলাও পড়েছে। সেই জল মাটির তলায় পৌঁছলে আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সব মিলিয়ে চাষিরা দিশেহারা।
ইতিমধ্যেই যে সব চাষির জমির আলু নাবিধসায় আক্রান্ত হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আরামবাগের রামনগর গ্রামের বিদ্যাপতি বাড়ুই বা পুরশুড়ার কেলেপাড়ার রবিন মালিকের অভিযোগ, ‘‘কৃষি দফতরের সুপারিশমতো ১২০০-২৫০০ টাকা লিটার দরে কেনা ওষুধ প্রয়োগ করেও নাবিধসা রোগ নির্মূল করা যাচ্ছে না। গাছের পাতায়-ডাঁটায় এবং কাণ্ডে বাদামি রংয়ের ক্ষত হচ্ছে। সেই ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গোটা গাছে পচন ধরাচ্ছে। গাছ কালো হয়ে যাচ্ছে এবং মাটির তলায় থাকা আলুতে পচন ধরছে।”
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির ১৮টি ব্লকে মোট আলু চাষের এলাকা ৮৭ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে ৩১ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমি রয়েছে আরামবাগ মহকুমাতেই। মহকুমা কৃষি দফতরের হিসেবে, ওর মধ্যে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমির আলু ইতিমধ্যেই নাবিধসা রোগে আক্রান্ত। রোগের প্রাদুর্ভাব যে ভাবে বাড়ছে, আক্রান্ত এলাকা আরও বাড়বে বলে চাষিদের আশঙ্কা। মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ বলেন, ‘‘এ রকম প্রতিকূল আবহাওয়ায় নাবিধসা রোগের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা আছে। রোগের আগাম প্রতিরোধ এবং প্রতিকার নিয়ে সচেতন করতে চাষিদের লিফলেট বিলি করা হচ্ছে, মাইকেও প্রচার করা হচ্ছে।”
জেলা জুড়েই এই সচেতনতা চলছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। নাবিধসা রোগ প্রতিকারে কৃষি দফতর যে সব প্রতিকারের কথা বলেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, আক্রান্ত জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। সেচের অতি প্রয়োজন দেখা দিলে মাটি ভেজানোর মতো হালকা সেচ দেওয়া যেতে পারে। সার দেওয়াও বন্ধ রাখতে হবে। আর ছ’রকম ছত্রাকনাশকের উল্লেখ করে তার মধ্যে যে কোনও একটি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।