Erosion

ফের গঙ্গা ভাঙন উত্তরপাড়া জুড়ে

কয়েক মাস ধরে জিটি রোড লাগোয়া কোতরং এলাকার বিরাট অংশ জুড়ে গঙ্গার পাড় ভাঙছে। ওই অঞ্চলের একটি আবাসনের পাঁচিল ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০১:২২
Share:

ভাঙন: উত্তরপাড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর দে

মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল। ফের গঙ্গা ভাঙন দেখা দিয়েছে উত্তরপাড়া পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায়। কবে এবং কী ভাবে এই ভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

কয়েক মাস ধরে জিটি রোড লাগোয়া কোতরং এলাকার বিরাট অংশ জুড়ে গঙ্গার পাড় ভাঙছে। ওই অঞ্চলের একটি আবাসনের পাঁচিল ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। কোতরং আদর্শ বিদ্যালয়ের পিছনেও গঙ্গার পাড়ের বড় অংশ জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভদ্রকালীর শিবতলা শ্মশান লাগোয়া এলাকাও ভাঙনপ্রবণ। সেচ দফতর থেকে মাঝে মাঝে পাড় বাঁধানোর কাজ করছে ঠিকই। কিন্তু তা স্থায়ী হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

পরিস্থিতি এখন এমনই যে, বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কায় কোতরং এলাকার একটি আবাসন কমিটির পক্ষ থেকে রাজ্য সেচ দফতরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওই আবাসনের বাসিন্দা বিপাশা দাস বলেন, ‘‘যে ভাবে ভদ্রকালী, কোতরং, শখের বাজার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গঙ্গার পাড় ভাঙছে, তা আগামী দিনের পক্ষে অশনি সঙ্কেত। প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

Advertisement

সেচ দফতরের নিম্ন দামোদর বিভাগের হুগলি জেলার এগ‌্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কুন্দন কুমার বলেন, ‘‘আমরা ওই এলাকায় ভাঙনের বিষয়টি বিভাগীয় কর্তাদের জানিয়েছি। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ শুরু হয়েছে।’’ উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষজন আমাকেও ভাঙনের বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি পোর্ট ট্রাস্ট এবং সেচ দফতরকে জানাব। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করব।’’

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু উত্তরপাড়াই নয়, বালি থেকে বাঁশবেড়িয়া— গঙ্গার ধার বরাবর প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার জমি পলিমাটিযুক্ত। তাই ওই সব এলাকাই ভাঙনপ্রবণ। গত দু’তিন বছরে উত্তরপাড়া থেকে চন্দননগর পর্যন্ত নানা এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। বছর দেড়েক আগে উত্তরপাড়ার শিবতলা শ্মশান গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। জরুরি ভিত্তিতে সারায় সেচ দফতর।

বেশ কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকারের তরফে উত্তরপাড়ার কোতরং এলাকায় কলকাতা পুরসভার জমিতে ‘ফিল্ম সিটি’ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু জমির চরিত্র পরীক্ষা করে এবং গঙ্গা ভাঙনের জেরে প্রকল্প তৈরির বিপক্ষে মত দেয় বিশেষজ্ঞ সংস্থা। উত্তরপাড়ার পরিবেশ কর্মী শশাঙ্ক কর বলেন, ‘‘বিধি অনুয়ায়ী যে নদীতে জোয়ার-ভাটা খেলে, তার পাড় থেকে ৪৭ মিটারের মধ্যে কোনও নির্মাণ করা যায় না। কিন্তু হুগলিতে গঙ্গার পাড় জুড়ে অনেক পুর এলাকাতেই
সেই বিধির তোয়াক্কা করা হচ্ছে
না। নির্মাণ হচ্ছে।’’ শখেরবাজার এলাকার এক বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘এখানকার একটি ইটভাটার গঙ্গা লাগোয়া নিচু জলা জমি সাদা বালি দিয়ে বুজিয়ে আবাসন হল। প্রোমোটাররা অনুমতি পায় কী করে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement