দুর্গাপুেজা কমিটির সঙ্গে বৈঠক পুলিশের। রবিবার পান্ডুয়ায়।
করোনা আবহে এ বার দুর্গাপুজো। ভিড় থেকে সংক্রমণ রোধে খোলামেলা মণ্ডপ নির্মাণ, মণ্ডপ স্যানিটাইজ় করা-সহ পুজো উদ্যোক্তাদের জন্য ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে প্রশাসন। তা যাতে কঠোর ভাবে মানা হয়, সে জন্য আর এক নির্দেশ জারি করল চন্দননগর পুলিশ কমিনারেট। সেই নির্দেশ বলছে— যে সব পুজো কমিটি প্রশাসনিক নির্দেশিকা পুরোপুরি মানবে, তাদেরই শুধু সরকারি অনুদানের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। তাই এ বার আগে নয়, পুজো মিটলে তবে অনুদান পাবে পুজো কমিটিগুলি।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘এ বার অন্যরকম পরিবেশে শারদীয়া উৎসব হতে যাচ্ছে। আমরা চাই না উৎসবের সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক, যাতে পরে করোনার বিপদ বাড়ে। তাই সরকারি গাইডলাইনের কথা প্রতিটি পুজো কমিটিকে জানিয়ে দিয়েছি। মণ্ডপে দূরত্ববিধি মানতে হবে। যে সব পুজো কমিটি সরকারি নির্দেশিকা সুষ্ঠু ভাবে পালন করবে তাদেরই পুজোর পরে অনুদানের টাকা দেওয়া হবে।’’
কয়েক বছর ধরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছে। প্রতিটি থানা এলাকায় তালিকা ধরে পুজো কমিটিগুলিকে এতদিন পুজোর আগেই অনুদানের চেক দিয়ে দেওয়া হত। তাতে পুজো উদ্যোক্তাদের কিছুটা সুরাহা হত। এ বার করোনা আবহে নিয়ম পাল্টাল চন্দননগর কমিশনারেট। কমিশনারেট এলাকায় ১২০৮টি বারোয়ারি দুর্গাপুজো হয়। অনুদানের টাকা পেতে তাই পুজো কমিটিগুলিকে কোমর বেঁধে নামতে হবে।
রবিবার উত্তরপাড়া পুরসভার গণভবনে পুর প্রশাসক এবং চন্দননগর কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার ঈশানী পালের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। সেখানে শহরের পুজো কমিটিগুলির কাছে পুরো পরিস্থিতি ফের ব্যাখ্যা করেন পুরপ্রশাসক দিলীপ যাদব এবং কমিশনারেটের কর্তারা।
কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, খোলামেলা মণ্ডপ করতে হবে। যাঁরা অঞ্জলি দেবেন, তাঁদের প্রত্যেককে বাড়ি থেকে নিজের দায়িত্বে ফুল নিয়ে আসতে হবে। দূরত্ববিধি বজায় রেখে মণ্ডপে পুজো দেওয়ার আয়োজন করতে হবে উদ্যোক্তাদের। প্রয়োজনে একাধিক বারে পুজো দেওয়ারা ব্যবস্থা করতে হবে। মণ্ডপে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন পুরোপুরি বন্ধ। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে মাস্ক পরতেই হবে। প্রয়োজনে পুজো কমিটি মাস্ক সরবরাহ করবে।
গ্রামীণ হুগলির পুজোগুলিকে অনুদানের টাকা কোন পর্যায়ে দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘সব পুজো কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকদের নিয়ে একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ করা হবে। সরকারি নির্দেশ ওই গ্রুপে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
এ দিন পান্ডুয়ার পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে বালিহাট্টা মোড়ের একটি লজে বৈঠক করে পুলিশ। কিছু পুজো কমিটি অনুদানের আর্জি জানায়। তবে, কোন কোন পুজো কমিটি কী ভাবে অনুদান পাবে, তা অবশ্য স্থির হয়নি।
বৈঠকে ছিলেন বিধায়ক আমজাদ হোসেন, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা, বিডিও স্বাতী চক্রবর্তী, জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের ডেপুটি পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শুভাশিস চৌধুরী প্রমুখ। বিডিও পুজোর আয়োজনে সরকারি নির্দেশিকার কথা মনে করিয়ে দেন উদ্যোক্তাদের।
(তথ্য সহায়তা: সুশান্ত সরকার)