জঞ্জাল খুঁজতে ড্রোন উড়বে শ্রীরামপুরে। —ফাইল চিত্র
ডেঙ্গি মোকাবিলায় শ্রীরামপুরেও প্রশাসনের হাতিয়ার হচ্ছে ড্রোন। আকাশে উড়ে গলিঘুঁজিতে জমে থাকা জল, আবর্জনা খুঁজে বের করবে এই ক্যামেরা। মশা নিধনে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার দুপুরে ডেঙ্গি নিয়ে শ্রীরামপুরে এক বৈঠকের পরে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, চলতি বছরে এই জেলায় ১৭১২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি রিষড়ায় ডেঙ্গি-মোকাবিলা সংক্রান্ত বৈঠকে ড্রোন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শ্রীরামপুরেও সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে বৃহস্পতিবার থেকে দু’টি ড্রোন নামানো হবে। কোথায় জল বা আবর্জনা জমে আছে, সেগুলো তা খুঁজে বের করবে। ওই তথ্য স্থানীয় কাউন্সিলরকে পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। আবাসনে, বাড়িতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে।’’
দেড় মাস ধরে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে শ্রীরামপুরে। মঙ্গলবার সুনিধি শর্মা নামে শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কেএল গোস্বামী সরণির একটি শিশু ডেঙ্গিতে মারা যায় কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় আনা হয়েছিল। তার আগে শিশুটি শ্রীরামপুরে বটতলার কাছে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, শিশুটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। বুধবার সন্ধ্যায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে চুঁচুড়ায় নথিপত্র-সহ ডেকে পাঠিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা কথা বলেন।
তার আগে এ দিন দুপুরে শ্রীরামপুরে বৈঠক করলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। মহকুমাশাসকের (শ্রীরামপুর) দফতরে ওই বৈঠকে তিনি ছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রলয় মজুমদার, মহকুমাশাসক তনয় দেব সরকার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়-সহ পুরসভার অন্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, যে সব এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি, সেখানে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কী করা দরকার তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। ডেঙ্গি-রোগীদের জন্য শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, এমনিতে ১০ শতাংশ মানুষের জ্বর হওয়া স্বাভাবিক। আরামবাগ, শ্রীরামপুর, রিষড়া এবং চন্দননগরের কিছু জায়গায় তা ১৪%-১৬% হয়েছিল। দিন দশেক ধরে ১২%-এ নেমে এসেছে। তাঁর কথায়, ‘‘ডেঙ্গির মশার চরিত্র বদলাচ্ছে। আগে জানা ছিল, এই মশা সকালে কামড়ায়। এখন রাতেও কামড়াচ্ছে। জমে থাকা খুব সামান্য জলেই এরা ডিম পাড়ে। তাই এ ধরনের মশা জন্মানো বন্ধে সাধারণ নাগরিকদের সচেতনতা জরুরি।’’