ফাইল চিত্র
তৃণমূল জেলা সভাপতি পদে দিলীপ যাদবের পুনর্নিয়োগকে ঘিরে ‘কোন্দল’ তীব্র হয়েছে দলের অন্দরে। তৃণমূল সূত্রের খবর, দিলীপবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত দলের নেতা ও বিধায়কদের একাংশ ইতিমধ্যেই রীতিমতো বৈঠক করে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে দল পরিচালনা করছেন দিলীপবাবু। অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর বিরোধীদের প্রতি জেলা সভাপতির বার্তা: ‘‘কিছু বলার থাকলে সংবাদ মাধ্যমে না-জানিয়ে সরাসরি আমাকে জানান।’’
দল পরিচালনায় দিলীপবাবুর উপুরে আস্থা রেখে তাঁকে ফের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য নেতৃত্বের ‘আস্থাভাজন’ দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ ‘অনাস্থা’ জানানোয় সংগঠনের অন্দলে ‘কোন্দলের’ সলতে পাকানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ।
তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলায় দলের বিধায়কদের একাংশ দলের জেলা সভাপতির কাজে ‘ক্ষুব্ধ’। ক্ষোভের আঁচ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পোঁছে দিতে সোমবার সিঙ্গুরে দিলীপ-বিরোধী বিধায়কেরা বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠকে হাজির ছিলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এবং আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা-সহ বেশ কয়েকজন প্রথম সারির জেলা নেতা।
বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করলে কোনও রাখঢাক না-করে প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি দিলীপবাবু বিধায়কদের সঙ্গে কথা না-বলে একক ভাবে প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাই জেলার অধিকাংশ বিধায়কই ক্ষুব্ধ। বৈঠকে আসেননি এমন অনেক বিধায়কও ফোনে আমাকে একই কথা জানিয়েছেন।’’
দিলীপ-বিরোধীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘আমরা আপাতত ধীরে চলো নীতিতে চলব। এটাই বৈঠকে ঠিক হয়েছে। কারণ দল জেলায় দুই কো-অর্ডিনেটর মনোনীত করেছে। দল পরিচালনায় তাঁদের ভূমিকা কী হয়, তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’ তবে ‘পরবর্তী সিদ্ধান্ত’ বলতে কী বোঝাতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করেননি ওই বিধায়ক। দিলীপ-বিরোধী শিবিরের খবর, এখনই তাঁরা জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নালিশ করার পথে হাঁটছেন না।
জেলা সভাপতির বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূল বিধায়কদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘ব্লক থেকে বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠনের কাজে আমাদের উপেক্ষা করছেন দিলীপবাবু। যদিও বিধায়কদের সঙ্গে নিয়েই তাঁকে কাজ করতে বলেছে দল।’’ কৃষ্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দলের নতুন দুই কো-অর্ডিনেটরের ভূমিকা ঠিক কী হতে যাচ্ছে, কী ভাবে তাঁরা কাজ করবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারটি আরও স্পষ্ট হওয়া দরকার।’’
দিলীপবাবু অবশ্য অভিযোগ মানছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি দলের অনুগত কর্মী। সবাইকে নিয়েই আমি সংগঠনের কাজ করি। তবে আমার কাজে কেউ কোনও খামতি দেখলে তাঁরা আমাকেই বলতেই পারেন।’’