পাথরের কালীপ্রতিমার বুকে পা দিয়ে পুজো করেন পূজারি। ভক্তের আকুতি পৌঁছে দিতে পাথরে বা কাঁচের উপরে মাথা ঠোকা হয়। এরকম নানা উপাচার জড়িয়ে রয়েছে আরামবাগের রতনপুরের ৫২ বছরের পুরনো কালীপুজোর সঙ্গে। পুজোর দিনে ভক্তদের ভিড় সামলাতে রাখতে হয় পুলিশি ব্যবস্থা। আরামবাগ-সহ হুগলি জেলা তো বটেই কলকাতা থেকেও বহু মানুষ এই পুজোয় আসেন এখানে।
আরামবাগ শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে রতনপুর গ্রামের এই পুজোয় কোনও প্রচলিত মন্ত্র নেই। বছর বাষট্টির পূজারি কালীশঙ্কর সাঁতরার কথায়, “মাকে স্মরণ করে নিজের মনে যে গান বা কথা আসে সেটাই আমার মন্ত্র”। কিন্তু প্রতিমার বুকে পা রেখে পুজো করেন কেন? কালীশঙ্করবাবুর দাবি, তিনি ৯ বছর থেকে কালী মূর্তি তৈরি করে পুজো করছেন। যুবক বয়সে তিনি এক বার ১২ ফুট উচ্চতার কালীমূর্তি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু চক্ষুদানের সময়ে মূর্তির মুখের নাগাল পাচ্ছিলেন না। তখন দুঃখে মাথা ঠুকছিলেন। তখন এক মহিলা কন্ঠ তাকে চৌকিতে উঠে মূর্তির বুকে পা দিয়ে কাজ করতে নির্দেশ দেন। সেই থেকেই তিনি প্রতিমার বুকে পা দিয়েই পুজো করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ৫২ বছর আগে একটি তালপাতার ছাউনি করে এই কালীপুজো শুরু হয়েছিল। এখন সেই জায়গায় প্রায় চার বিঘা জমির উপরে তৈরি হয়েছে মন্দির। মন্দিরে রয়েছে পাথরের কালী মূর্তি। রূপ দক্ষিণা কালী। প্রায় ১৫ বছর ধরে কালীশঙ্করবাবু আর মাটির প্রতিমা তৈরি করেন না। পাথরের মূর্তি তুলনায় ছোট। নিত্য পুজো হয়। তবে মূর্তির বুকে পা দিয়ে পুজো করার প্রথা বদলায়নি। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার এবং শনিবার ভক্তদের ভিড় বেশি হয়। তবে বিশেষ ধূমধাম হয় কার্তিক মাসের কালীপুজোয়। এই সময়ে ভক্তদের তরফে ৮ থেকে ১০ রকম বাদ্য যন্ত্র থাকে। হয় পাঁঠা বলি। থাকে ভাত, খিচুড়ি, লুচি ভোগের ব্যবস্থা।