এক তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: সুব্রত জানা
আমপানে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রবিবার উলুবেড়িয়ার দুই তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন উলুবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে জোয়ারগোড়ি পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের প্রদ্যুৎ পাল। যদিও তাঁর বাড়ির ক্ষতি হয়নি। ওই পঞ্চায়েতেরই কর্মী, স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুরঞ্জন দেশমুখ একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে পরিবারের চার সদস্যকে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। শাসকদলের ওই দুই নেতা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ ইলিয়াস জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
এ দিন সকালে কয়েকশো বিজেপি কর্মী সুরঞ্জন ও প্রদ্যুৎবাবুর বাড়ির সামনে হাজির হন। প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে টাকা ফেরত দিতে হবে ওই দুই নেতাকে। বিক্ষোভ শেষে এলাকায় মিছিল করেন তাঁরা।
প্রদ্যৎবাবুর দাবি, ‘‘ঝড়ে আমার ঘরের কোনও ক্ষতি হয়নি। তাই ঘর সারানোর জন্য ক্ষতিপূরণ চাইনি। পানের বরোজ ভেঙে গিয়েছিল। সেই কারণে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘ভুলবশত ঘর মেরামতির জন্য ক্ষতিপুরণের টাকা আমার অ্যাকাউন্টে চলে আসে। আমি টাকা ফেরত দিতে চেয়ে বিডিও-র কাছে আবেদন করেছি। বিজেপি এটা নিয়ে রাজনীতি করছে।’’ অন্য দিকে, সুরঞ্জনবাবুর সাফ কথা, ‘‘ঝড়ে বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল। তাই ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করেছিলাম।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘পরিবারের চার জন সদস্যই আলাদা বাড়িতে থাকেন। সকলেরই বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল। সেই কারণে চার জনই ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।’’
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি জানা নেই।
খোঁজ নিয়ে তদন্ত করা হবে। পঞ্চায়েত সদস্য ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেওয়ার আবেদন করলে তা ফেরত নেওয়া হবে।’’
জোয়ারগোড়ি পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে থাকায় শাসকদলের নেতাদের একাংশ প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের বা পরিবারের সদস্যদের নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় তুলে দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতা রমেশ সাধুখাঁর দাবি, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরে আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলাম ব্লক প্রশাসনের কাছে। সেই তালিকা পেয়ে দেখছি, যে সব গরিব মানুষের ঘরের ক্ষতি হয়েছিল, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাননি। অথচ, বাড়ির কোনও ক্ষতি না-হলেও অনেককে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। টাকা লুট করেছেন তাঁরা।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে।’’