প্রতীকী ছবি।
লকডাউন মান্য করাতে হুগলির বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে আনাজ বিক্রির ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। তার মধ্যেই এলাকাবাসীর একাংশ চড়া দামে আনাজ বিক্রির বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আনাজের দাম বেঁধে দিয়েছিল প্রশাসন। দেওয়া হয়েছিল নজরদারির আশ্বাসও। কিন্তু সেই আশ্বাসেও ভরসা মিলল না। মঙ্গলবারও সেই পুরনো চড়া দামেই আনাজ বিক্রির অভিযোগ বজায় রইল।
তবে ফের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কথা শুনিয়েছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘আমরা এ বার প্রশাসনের তরফে বাজারে বাজারে আধিকারিকদের পাঠাব। দেখব প্রশাসনের বেধে দেওয়া দামের সুফল মানুষ পাচ্ছেন কি না। এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকেও কাজে লাগানো হবে।’’
জেলার অন্যতম বড় পাইকারি বাজার বৈদ্যবাটীর দিল্লি রোড লাগোয়া নিয়ন্ত্রিত বাজারে মঙ্গলবারও চড়া দাম নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কাঁচা আনাজের পাইকারি ক্রেতাদের অভিযোগ, ‘‘দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেই। সরকারি দামের চেয়ে বেশি দামে কাঁচা আনাজ কিনতে হচ্ছে। তার উপর আমাদের যাতায়াত খরচ আছে। তাই সরকারি দামের চেয়ে বেশি দামে আনাজ বিক্রি করতে হবে।’’
সরকার নির্ধারিত বাজারদর
চাল (স্বর্ণমাসুরি)- ২৮ টাকা
চাল (আইআর-৩৬)-৩০ টাকা
মুগ ডাল -১২০ টাকা
মুসুর ডাল- ১১৫টাকা
আলু (জ্যোতি)- ২০ টাকা
পেঁয়াজ (সুখসাগর)- ২০টাকা
টোম্যাটো- ২০ টাকা
বেগুন- ৪০ টাকা
করলা- ৩০ টাকা
কুমড়ো- ২০ টাকা
ঢেঁড়স- ২৫ টাকা
ঝিঙে- ৪০ টাকা
পটল- ৪০ টাকা
লঙ্কা- ৫০ টাকা
সিঙ্গাপুর কলা (১২টা)- ৪২ টাকা
ডিম (১২টা)- ৬০ টাকা
মাছ (রুই)- ২০০ টাকা
দাম প্রতি কেজিতে
২৮ এপ্রিল, ২০২০
আনাজের পাশাপাশি ফলের দামও এখন বেশ চড়া। ১৩০ টাকা কেজি আপেল বেড়ে ১৫০ টাকা, ১০০ টাকা থেকে খেজুর দেড়শো টাকা হয়েছে। শশা এক লাফে বেড়ে ৫০ টাকা, কাঁঠালি ও সিঙ্গাপুরি কলা এখন ডজন ৬০ টাকায়।
পাশাপাশি পাইকারি বাজারে ভিড় নিয়েও অভিযোগ উঠছে। প্রশাসনের ড্রোন নজরদারি চালালেও কৃষক বাজারের ভিড় চমকে দেওয়ার মতো। হুগলি জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব ফিরদোসুর রহমান বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করতে মাইক প্রচার হচ্ছে। ড্রোন নজরদারি চলছে। তবে পাইকারি বাজারে বহু মানুষ আসেন। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের বিধি মানতে অনেক বাজার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দননগরের বৌবাজারকে সরিয়ে দেওয়া হয় দিল্লি রোড সংলগ্ন আশ্রমমাঠে। নিষেধাজ্ঞা জারি সত্ত্বেও সেখানে অন্য জেলার ব্যবসায়ীদের আনাগোনা শুরুর অভিযোগ ওঠে। জমায়েত এড়াতে জেলাপ্রশাসন বিশেষ নজরদারির সিদ্ধান্ত নেয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য জেলার ব্যবসায়ীদের সেখানে আসার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। সেই জন্য অন্য জেলার ব্যবসায়ীদের রুখতে আধার কার্ড দেখে বেচাকেনা শুরু হয় ব্যবসায়ীদের। মঙ্গলবার সকাল থেকে চলে কড়া পুলিশি নজরদারি।