Coronavirus Lockdown

পা চলে না, তবু দুঃস্থদের পাশে মলয়রা

কয়েক দিন ধরে এমনটাই চলছে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০১:৫৪
Share:

প্রতিবন্ধীদের উদ্যোগে চলছে খাবার বিলি। —নিজস্ব চিত্র

গ্রামের পথ বেয়ে এগিয়ে আসছেন ওঁরা। এক-একটি বাড়ির সামনে থামছেন। ট্রাই-সাইকেল থেকে কয়েকটি প্যাকেট তুলে দিচ্ছেন গরিব-দুঃস্থদের হাতে। প্যাকেটে চাল, ডাল, আলু, সুজি, মুড়ি, ডিম।

Advertisement

কয়েক দিন ধরে এমনটাই চলছে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুরে। শারীরিক অক্ষমতার কারণে বিশ্বনাথ ঢাকি, রাসমণি নাঢ়, মলয় দত্ত, সোমনাথ লাল, খোকন ঘোষরা হাঁটতে পারেন না। কিন্তু ওঁরাই করোনায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

কানাইপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মানসিক চাহিদাসম্পন্ন ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদান করা হয়। মলয়, সোমনাথরা সেখানে কাগজের ঠোঙা এবং পাপোষ তৈরি করা শেখান। মিড-ডে-মিলের রান্নার পাশাপাশি ওই কাজ করেন রাসমণিও। তাঁদের মাসিক উপার্জন সাকুল্যে ৮০০-৯০০ টাকা।

Advertisement

লকডাউনে স্কুল বন্ধ। কাজ অবশ্য থেমে নেই। বরং দায়িত্ব বেড়েছে।

প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক সুবীর ঘোষ জানান, রাসমণি, খোকন, সোমনাথরা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সাহায্য চাইছেন। অনেকেই তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। স্কুলে বসে সেগুলি প্যাকেটে ভরছেন রাসমণিরা। তার পরে সেগুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। বিশ্বনাথ ক্রাচের সাহায্যে। বাকিরা ট্রাই-সাইকেলে। ওই সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন রোজগার হারানো মানুষের হাতে।

ডানকুনির খড়িয়ালের বাসিন্দা বিশ্বনাথ পোলিয়োয় আক্রান্ত। বাঁ পা নেই। বাবা দিনমজুর। মা ক্যানসার আক্রান্ত। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়েও মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে দু’বার ভাবেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘শরীরে জোর না থাকলে কী হবে, মনের বল আছে। সেই শক্তিতেই এগিয়ে যাই। এই অসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াব না!’’

কথার ফাঁকে বলে ফেলেন, ‘‘অনেকেই আমাদের অবজ্ঞা করেন। অক্ষমতা নিয়ে টিপ্পনী কাটেন। খুব কষ্ট হয়। কি ন্তু সুযোগ পেলে আমরাও শক্ত সমর্থ মানুষের মতো অন্যদের পাশে দাঁড়াতে পারি।’’

কথায় কথায় মাথার উপরে রোদ্দুর চড়তে থাকে। রাস্তা দিয়ে এগোতে থাকে গোটাকতক ট্রাই-সাইকেল আর একটা ক্রাচ। হাতে ত্রাণসামগ্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement