Coronavirus

হাতে নেই খাবার কেনার টাকাও

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শোলার উপকরণ তৈরি ও বাজারে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থ সঙ্কট তৈরি হয়েছে এ অঞ্চলের শোলা-বাজারে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫২
Share:

ফাইল চিত্র

জমিজমা বলতে কিছু নেই। নিজের বলতে রয়েছে মাটির দেওয়াল, খড়ের ছাউনির ছোট কুঁড়েঘর। শোলা কেটে নানা উপকরণ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেই তাঁর উপার্জন। পাঁচজনের সংসার চালাতে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করতে হয়। মন্দিরবাজারের গোকুলনগর গ্রামের মাঝবয়সি শোলাশিল্পী সুবল হালদারের সংসারের এই ছবি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শোলার উপকরণ তৈরি ও বাজারে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থ সঙ্কট তৈরি হয়েছে এ অঞ্চলের শোলা-বাজারে। শিল্পীদের এক বেলা কোনও মতে খাবার জুটছে।

মন্দিরবাজার ব্লকের চাঁদপুর চৈতন্যপুর পঞ্চায়েতে গোকুলনগর, পুকুরিয়া, মহেশপুর, বাজারবেড়িয়া, দিগবেড়িয়া, হাটখোলা, উদয়পুর-সহ প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের বাসিন্দারা রুজি-রোজগারের কারণে শোলা শিল্পের উপরেই নির্ভরশীল। শুকনো শোলা ছুরি দিয়ে কেটে তাতে নানা রঙ লাগিয়ে সুন্দর সুন্দর কদম, গোলাপ, সূর্যমুখী-সহ নানা ফুল তৈরি করেন তাঁরা। শিল্পীদের তৈরি এই সামগ্রী চলে যায় কলকাতার বড়বাজারে। বড়বাজার থেকে সেসব যায় বিভিন্ন জেলায়। যায় বিদেশেও। শোলাশিল্পের রমরমার জন্যই মন্দিরবাজার এলাকা জুড়ে নিচু জলাশয়ে শোলা চাষও শুরু হয়েছে বছর দশেক হল। কাঁচা শোলা জলাশয় থেকে তুলে রোদে শুকিয়ে বাজারে বিক্রি হয়। প্রতি শনিবার ভোর থেকে সকাল পুকুরিয়ায় বাজারও বসে এ জন্য। ওই বাজার থেকেই শোলা কেনেন শিল্পীরা।

Advertisement

ওই এলাকায় রয়েছে একাধিক বড় শোলার জিনিস তৈরির কারখানাও। ওই সব কারখানায় কয়েকশো পরিবার কাজ করে। কারখানা থেকে শোলা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অর্ডার-মাফিক নানা জিনিস তৈরি করে আনেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মজুরির ব্যবস্থাও রয়েছে। একজন শিল্পী সারাদিনে অনায়াসে ২৫০-৩০০ টাকা উপার্জন করতে পারেন।

কিন্তু এ সবই এখন বন্ধ। কারখানায় কাজ করা এক শোলাশিল্পী বিকাশ হালদার বলেন, ‘‘লকডাউনের আগে থেকেই শোলাশিল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রথম কয়েকদিন মালিকের কাছে পাওনা মজুরির টাকা দিয়ে সংসার চালাচ্ছিলাম। এখন হাতে কোনও টাকা নেই।’’ তিনি আরও জানান, বাজার-হাট করতে পারছেন না। রেশন থেকে চাল দিয়েছিল। তা ক’দিনে শেষ হয়ে গিয়েছে। এর পর কী হবে?

মন্দিরবাজারের বিডিও সইদ আহমেদ বলেন, ‘‘ওই সব শোলাশিল্পীদের যাতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে যুক্তে করে তাঁদের উপার্জনের ব্যবস্থা করা যায়, সে বিষয়ে সমস্ত পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement