লকডাউনে ছাড় পাওয়ার পর চালু হল ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর জুটমিল। ছবি: তাপস ঘোষ
ছাড় মিলেছিল কিছুদিন আগেই। অবশেষে সরকারি নির্দেশমতো কম শ্রমিক নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে খুলে গেল ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর জুটমিল। লকডাউনে হুগলি জেলায় এই প্রথম কোনও জুটমিল খুলল।
রাজ্য সরকার কিছুদিন আগে কম শ্রমিক নিয়ে জুটমিলগুলি খোলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কম শ্রমিকে কী ভাবে কাজ হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বিভিন্ন জুটমিল কর্তৃপক্ষ। কাজ না-পাওয়া শ্রমিকদের অসন্তোষের জেরে অশান্তিরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে। ভদ্রেশ্বরের ওই জুটমিলে শ্রমিক সংখ্যা সাড়ে চার হাজারেরও বেশি। এ দিন
অবশ্য সেখানে সরকারি নির্দেশমতো প্রতি শিফ্টে ৩০০ শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো শুরু হয়। উৎপাদনের মাত্রা বজায় রাখতে শ্রমিক সংখ্যা আরও কিছুটা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদনের চিন্তাভাবনা করছেন কর্তৃপক্ষ।
জুটমিলের পার্সোনেল ম্যানেজার কল্যাণ মিত্র জানান, দীর্ঘদিন মিল বন্ধ থাকায় সব শ্রমিক মহল্লায় নেই। যাঁরা পেরেছেন, তাঁরা নিজেদের জায়গায় চলে গিয়েছেন। মিলে প্রতি শিফ্টে কাজের জন্য শ্রমিকদের নাম টাঙিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা এখন অনুপস্থিত থাকছেন, তাঁদের জায়গায় বিকল্প শ্রমিক নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন মিল চালানোর পর সরকারের থেকে অনুমতি চাইব, বাড়তি কিছু শ্রমিককে অন্তত কাজে নিতে। তা হলে উৎপাদনে সুবিধা হবে। শ্রমিকেরাও কাজ পাবেন।’’
সব শ্রমিক কাজ না পেলে অন্য সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। মিলের এআইটিইউসি নেতা অবনী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই শ্রমিক সংখ্যা নিয়ে যে উৎপাদন হবে, তাতে মিল কর্তৃপক্ষ লাভের মুখ দেখতে পাবেন না। আমরা ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে অন্তত ৩৫ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে মিলে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। না হলে মুশকিল হবে। যাঁরা কাজ পাবেন না, তাঁরা কেন মানবেন?’’
জুটমিল সূত্রের খবর, আপাতত তিন শিফ্টে আট ঘণ্টার পরিবর্তে সাত ঘণ্টা করে কাজ হবে। সরকারি নির্দেশমতো প্রতি শিফ্টের শেষে প্রতিটি বিভাগ স্যানিটাইজ় করা হবে। শ্রমিকেরা মাস্ক পরে কাজ করবেন। এতদিন পরে মিল খোলায় শ্রমিক মহল্লায় কিছুটা স্বস্তি।