সতর্ক: বসতে হবে নিরাপদ দূরত্বে। বাগনান কিসান মান্ডি। নিজস্ব চিত্র
দু’বছর আগে তৈরি হয়েছিল বাগনান কিসান মান্ডি। বাগনান রথতলা থেকে পাইকারি আনাজ বাজার এখানে সরিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। পাইকারি আনাজ বিক্রেতারা রথতলা থেকে সরতে রাজি হননি। কিন্তু করোনা-আতঙ্ক সেই অসাধ্য সাধন করল। দু’দিন আগে পাইকারি আনাজ বাজার সরে এসেছে ওই কিসান মান্ডিতে। প্রায় দেড়শো চাষি রথতলা বাজারে আনাজ বিক্রি করতে আসতেন। অনেকে আবার ধূলাগড়ি বাজার থেকেও আনাজ কিনে এনে এখানে বিক্রি করতেন। খুচরো বিক্রেতারা এখান থেকে আনাজ কিনে নিয়ে যেতেন। কিন্তু দু’দিন ধরে সেই ছবি দেখা যাচ্ছে মানকুর মোড়ের কাছে তৈরি হওয়া ওই কিসান মান্ডিতে। এটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই প্রশাসন চাইছিল যাতে রথতলার পাইকারি আনাজ বাজারটি উঠে গিয়ে কিসান মান্ডিতে বসে। কিন্তু চাষি এবং বিক্রেতারা এখান থেকে কিসান মান্ডিতে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। নানা অজুহাতে তাঁরা রথতলাতেই বসতেন।
কিন্তু করোনা-সংক্রমণ আটকাতে লকডাউন ঘোষণার পরেই কোপে পড়ে রথতলার পাইকারি আনাজ বাজার। এখানে প্রতিদিন কয়েকশো ক্রেতা-বিক্রেতার জমায়েত হয়। প্রশাসন সাফ জানিয়ে দেয়, এখানে এই ভাবে জমায়েত চলবে না। তারপরেই চাষিদের জানিয়ে দেওয়া হয় কিসান মান্ডিতেই সবাইকে বসতে হবে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও প্রশাসনের চাপে আনাজ বাজার স্থানান্তরিত হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মান্ডিতে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আনাজ বেচাকেনা করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। সাদা রং দিয়ে তিন ফুট অন্তর গোলাকার বৃত্ত করে দেওয়া হয়। সেখানেই বসছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদেরও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এ বার থেকে এখানেই বসবে পাইকারি আনাজ বাজার। আনাজ বাজার চালু হওয়ায় মান্ডিতে যে সব দোকানদার ‘লিজে’ স্টল নিয়েছেন, সেগুলিও চালু করার ব্যবস্থা হবে।
লকডাউনের জেরে সাময়িক ভাবে স্থানান্তরিত হচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন বাকসি হাটও। রূপনারায়ণের ধারে অবস্থিত এই হাটটিতে ছোট্ট জায়গায় বহু ক্রেতা-বিক্রেতা ভিড় করেন। রবি ও বুধ— এই দু’দিন হাট বসে। জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার থেকে হাটটি বসবে কাছের একটি ফুটবল মাঠে। সেটি অনেক বড় জায়গা। তিন ফুট দূরে দূরে যাতে বিক্রেতারা বসেন, সে জন্য বৃত্ত তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, লকডাউন উঠে গেলেই হাটটি ফের পুরনো জায়গায় ফিরে যাবে।