Coronavirus in West Bengal

তৃণমূলের সভায় শিকেয় কোভিড-বিধি, অভিযোগ

অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী করবী মান্না। মঞ্চে থাকাকালীন তাঁর মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। মঞ্চে ছিলেন জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি রহিম নবী। তাঁর মুখও ছিল অবরণহীন।

Advertisement

সুশান্ত সরকার

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০২:১৪
Share:

পান্ডুয়ায় তৃণমূলের সভায় বক্তৃতা করছেন করবী মান্না— নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে হাজির শাসকদলের এক ডজনের বেশি নেতা-নেত্রী। তাঁদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েক জনের মুখে মাস্ক থাকলেও বাকিদের মুখ আবরণহীন। মঞ্চের সামনে ঘেঁষাষেঁষি করে বসে থাকা প্রায় হাজার খানেক কর্মীর মধ্যে মেরে কেটে একশো জনের মুখ ঢাকা। বৃহস্পতিবার পান্ডুয়া তেলিপাড়া মোড় এলাকায় জিটি রোডের পাশে অনুষ্ঠিত হুগলি জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীতে করোনা-বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠল।

Advertisement

অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী করবী মান্না। মঞ্চে থাকাকালীন তাঁর মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। মঞ্চে ছিলেন জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি রহিম নবী। তাঁর মুখও ছিল অবরণহীন। রাজ্য জুড়ে করোনা যখন ছড়াচ্ছে, তখন শাসকদলের এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক এলাকার সচেতন মানুষ। আড়ালে আবডালে তাঁদের অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘নেতা-নেত্রীরাই যদি এমন আচরণ করেন, তবে সাধারণ কর্মীদের দোষ দিয়ে লাভ কী।’’

এ দিন বিকাল ৪টে থেকে দু’ঘণ্টা চলে ওই সভা। সেখানে হাজির অনেককেই একে অপরকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। করমর্দনও করেন অনেকে। এই সব দেখে পান্ডুয়ার প্রবীণ এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্ট যখন দুর্গাপুজোয় এত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যখন চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী ও পান্ডুয়ার কালীপুজোয় শোভাযাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছে, তখন শাসকদল কী ভাবে করোনা-বিধি না মেনে সভা করে!’’

Advertisement

কী বলছেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী? করবীর দাবি, ‘‘আমার কাছে মাস্ক ছিল। তবে কথা বলার সময় মাস্ক গলায় রেখেছিলাম।’’ তারপর যোগ করেন, ‘‘আমরা অনেককে মাস্ক দিয়েছি। দূরত্ব-বিধি মানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যে ভাবে সাধারণ মানুষ এ দিন সভায় এসেছিলেন, তা অভাবনীয়। বেশির ভাগ কর্মী-সমর্থকের মুখে মাস্ক ছিল। যাঁরা পরে আসেননি, তাঁদেরকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, আগামী দিনে যেন তাঁরা মাস্ক পরে কর্মসূচিতে আসেন।’’

যে জায়গায় তৃণমূলের কর্মসূচি হয়, সেখানে প্রতিদিন ব্যবসা করেন অনেক ফলবিক্রেতা। অভিযোগ, শাসকদলের সভা থাকায় এ দিন তাঁদের বসতে দেওয়া হয়নি। ফলে, লক্ষ্মীপুজোর আগে যাঁরা দু’পয়সা রোজগারের আশা করেছিলেন, সেই ফল বিক্রেতাদের অনেক কার্যত খালি হাতে ঘরে ফিরতে হয়েছে। এক ফলবিক্রেতার কথায়, ‘‘সভা হবে বলে সকালেই আমাদের উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শাসকদলের সভা বলে ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। লক্ষ্মীপুজোর বেচাকেনা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। ভাল বিক্রির আশায় অনেক ফলও তুলেছিলাম। সেগুলি নিয়ে এখন কী করব?’’

এ বিষয়ে কাবেরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন কোনও বিষয় আমার জানা নেই।’’ যদিও পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘‘দু’ঘণ্টার মধ্যেই অনুষ্ঠান শেষ করে দিয়েছি। ফল বিক্রেতাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement