প্রতীকী ছবি
রাজ্যে পুরভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। এপ্রিলের মাঝামাঝি কলকাতা এবং হাওড়া পুরসভার ভোট হতে পারে বলে প্রশাসনিক মহলে চর্চা রয়েছে। রাজ্যের অন্য পুরসভার ভোট হওয়ার সম্ভাবনা তার পরে। কিন্তু এ দেশে করোনাভাইরাস যে ভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পুরভোট আপাতত স্থগিত রাখার আবেদন নিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিল চন্দননগরের পাঁচটি সংস্থা।
অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি, প্রবীণ নাগরিক অধিকার রক্ষা মঞ্চ, সবুজের অভিযান, পরিবেশ অ্যাকাডেমি এবং নারী ক্ষমতায়ন ও শিশু রক্ষা মঞ্চ নামে ওই পাঁচ সংস্থার সদস্যেরা শুক্রবার রাতে এক বৈঠকে পুরভোট স্থগিত রাখার পক্ষে সহমত পোষণ করেন। সেইমতো তাঁদের আবেদন শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব, নির্বাচন কমিশনার এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সচিবের কাছে পৌঁছে দেন। ওই পাঁচ সংস্থার সদস্যেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই আবেদনে কাজ না হলে তাঁরা রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানাবেন। প্রয়োজনে আদালতেরও দ্বারস্থ হবেন।
ওই পাঁচ সংস্থার পক্ষে পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইপিএলের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলা বন্ধ করে দেওয়া হল। করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে, সে জন্য বারবারই বহু মানুষের জমায়েতের ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে। পুরভোট মানেই সভা, সমাবেশ, মিছিল। পুর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে কিন্তু জমায়েত এড়ানো সম্ভব নয়। করোনা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া তখন কঠিন হয়ে যাবে।’’
ওই সংস্থার সদস্যেরা মনে করছেন, শুধু সভা-সমাবেশই নয়, ভোটের প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলির নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়িও যাবেন। ফলে, মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রতিদিন যোগাযোগ বাড়বে। তাতে সার্বিক ভাবে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে। তা ছাড়া, ভোটে রাজনৈতিক হানাহানি এ রাজ্যের চেনা ছবি। প্রশাসন সে সব সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে, করোনার মতো রোগ প্রতিরোধ সহজ হবে না।
আরও একটি কারণও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ওই সদস্যেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, পুর নির্বাচনের দিন ঘোষণা হলেই প্রশাসনিক ক্ষমতা রাজ্যের নির্বাচন কমিশনারের হাতে চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে করোনা মোকাবিলায় চাইলেও বিশেষ ভূমিকা নিতে পারবেন না রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। পুরোটাই কমিশনের উপর নির্ভর করতে হবে। তাতে করোনো- মোকাবিলা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এ সব কারণেই বিশ্বজিৎবাবুরা চাইছেন, পুরভোট অন্তত দু’মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক।