প্রতীকী চিত্র
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হাওড়ায়। কিন্তু তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যা্ন্স কই?
অ্যাম্বুল্যান্সের অভাব চিন্তায় ফেলে দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার যে সব ক্লাব বিধায়ক বা সাংসদ তহবিলের টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স পেয়েছে, তাদের চিঠি দেওয়া হয়। যাতে সেই সব অ্যাম্বুল্যান্স করোনা রোগীদের জন্য মেলে। কিন্তু দু’একটি ক্লাব ছাড়া আর কেউ সাড়া দেয়নি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি।
কিন্তু কেন?
ক্লাবগুলির বক্তব্য, অ্যাম্বুল্যান্স-চালকেরা আতঙ্কে যেতে রাজি হচ্ছেন না। এ দিকে যে দু’একটি ক্লাবের অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া গিয়েছে, তারা আবার অন্য একটি সমস্যার কথা বলছেন। পাঁচলা মোড়ের কাছে একটি ক্লাবের দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স আছে। তারা একটি উলুবেড়িয়া-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দিয়েছে। ক্লাবের কর্ণধার অজিত পাড়ুই বলেন, ‘‘আমাদের কাছে পড়ে আছে মাত্র একটি অ্যাম্বুল্যান্স। তাতে সাধারণ রোগীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কাছে প্রতিদিন যে সংখ্যক রোগী আসছেন, তাতে একটি মাত্র অ্যাম্বুল্যান্সে সমস্যা মিটছে না।’’
সমস্যার কথা স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘সাধারণ রোগীদের মধ্যে এখন খুব একটা অ্যাম্বুল্যান্সের চাহিদা নেই বলে আমাদের কাছে খবর আছে। এখন অগ্রাধিকার হলেন করোনা রোগীরা। আমাদের আরও অ্যাম্বুল্যান্স দরকার। সব কথা স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য আপাতত ‘১০২ অ্যাম্বুল্যান্স’ করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহার করছে। হাওড়ায় মোট ২৩টি ওই অ্যাম্বুল্যান্স আছে। এগুলি সাধারণত আসন্নপ্রসবাদের জন্য ব্যবহার হয়। ১০২ নম্বরে ফোন করলেই যিনি ফোন করছেন তাঁর বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় এই অ্যাম্বুল্যান্স। এতে বেশ কিছু আধুনিক ব্যবস্থা আছে। যেমন, যদি অ্যাম্বুল্যান্সেই প্রসব হয়ে যায়, তা হলে তার প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ব্যবস্থা করা আছে। একজন স্বাস্থ্যকর্মীও থাকেন। কিন্তু করোনার জন্য আপাতত এই অ্যাম্বুল্যান্স আসন্নপ্রসবাদের জন্য ব্যবহার করা হবে না বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
তবে, ‘মাতৃযান’ নামে আরও একটি অ্যাম্বুল্যান্স আছে মা এবং সদ্যোজাতদের জন্য। তাতে হাত দেওয়া হবে না বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, করোনা রোগীর সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে শুধু ‘১০২ অ্যাম্বুল্যান্স’-এ হবে না। সে জন্যই ক্লাবগুলির কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল।
জেলায় প্রায় প্রতি ব্লকে একটি করে ‘সেফ হোম’ রাখা হয়েছে। উপসর্গ নেই বা অল্প উপসর্গ আছে, এমন করোনা রোগীদের যদি বাড়িতে চিকিৎসার পরিবেশ না থাকে, তা হলে তাঁদের ‘সেফ হোমে’ রেখে চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ‘সেফ হোমে’ যাঁদের রাখা হয়েছে তাঁদের কয়েকজনের মধ্যে দ্রুত উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তখন তাঁদের নিয়ে যেতে হচ্ছে করোনা হাসপাতালে। আর এ জন্যই অ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজন বাড়ছে।