হুগলি জেলা সংশোধনাগার জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। ছবি: তাপস ঘোষ
ফের সংক্রমণ ছড়াল হুগলি জেলা সংশোধনাগারে। নতুন করে ছয় বন্দি এবং এক কারারক্ষীর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়েছে বলে রবিবার জেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
জেল সুপার বিনোদ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা পর্যায়ক্রমে সন্দেহজনক বন্দিদের চিহ্নিত করে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছি। তাতে সাত জনের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। সংক্রমিত বন্দিদের অন্য বন্দিদের থেকে আলাদা করে নিভৃতবাসে রাখছি। সংক্রমিত কারারক্ষীকেও নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। জেলের মধ্যে নিয়মিত স্যানিটাইজ়িংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’
দিন কয়েক আগে ওই জেলের এক বিচারাধীন বন্দি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর শরীরে জ্বর ও অন্য উপসর্গ ছিল। তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট আসার আগেই ওই বন্দির মৃত্যু হয়। পরে জানা যায়, ওই বন্দির করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’।
ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়ায় কারাকর্মী ও কারারক্ষীদের একাংশের মধ্যে। কারণ, জেলে বন্দির সংখ্যা উপচে পড়ছে। জেল কর্তৃপক্ষই জানান, সেখানে সর্বোচ্চ ৪০০ বন্দির থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে আদালতের কাজকর্ম কার্যত বন্ধ থাকায় জামিনের শুনানিতে অনেক ক্ষেত্রে দেরি হচ্ছে। তাই বন্দির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। বর্তমানে জেলে বন্দির সংখ্যা অন্তত ৭০০।
এই অবস্থায় দূরত্ববিধি বা সংক্রমণ রুখতে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মানা যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন কারাকর্মী ও কারারক্ষীদের একাংশ। কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। তাঁরা বন্দিদের মধ্যে সংক্রমণ কতটা মাত্রায় ছড়িয়েছে তা জানার জন্য করোনা পরীক্ষা শুরু করেন। কারারক্ষী ও কর্মীদের মধ্যেও শুরু হয় পরীক্ষা।
জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে সংক্রমিত সাত জনের শরীরে কোনও উপসর্গই ছিল না। ফলে, কিছু বোঝাও যায়নি। পরিস্থিতি বেগতিক আঁচ করে কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে জেলের কিছু ঘরকে সেলের চেহারা দিয়ে জায়গা বাড়িয়েছেন। কিন্তু যে হারে বন্দির সংখ্যা বাড়ছে, তাতে শেষ পর্যন্ত সংক্রমণ কতটা রোখা যাবে, সে প্রশ্ন থাকছেই।
জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, সংক্রমণ রুখতে জেলের ভিতর নিয়মিত স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে। পুরসভাও জেলের ভিতর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করছে। সব রকম ভাবেই চেষ্টা চলছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)