প্রতীকী ছবি
এক ধাক্কায় ৭৬ জন!
এতদিন হাওড়া শহর এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও গ্রামীণ হাওড়ায় তেমন সংক্রমণ ছিল না। কিন্তু এ বার জেলার গ্রামীণ এলাকাতেও এক সঙ্গে ৭৬ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়ল বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। সকলেই মুম্বই ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক। আক্রান্তদের ভর্তি করানো হয়েছে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে।
এ ভাবে একসঙ্গে এতজন পরিযায়ী শ্রমিক আক্রান্ত হওয়ায় জেলা প্রশাসনের উদ্বেগ বেড়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, এই ঘটনা তাঁদের চোখ খুলে দিয়েছে। আর কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। যে সব পরিযায়ী শ্রমিক আসছেন, তাঁদের উপরে কড়া নজরদারি চালানো হবে। কাউকে গৃহ নিভৃতবাসে পাঠানো হবে না। সবাইকে রাখা হবে সরকারি কোয়রান্টিন শিবিরে। সে জন্য লোকালয় থেকে দূরে আরও কোয়রান্টিন কেন্দ্রের ব্যবস্থা করার জন্য জায়গা খুঁজতে ব্লক প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মু্ম্বই, দিল্লি এবং গুজরাত থেকে যে সব পরিযায়ী শ্রমিক এ রাজ্যে ফিরবেন, সকলের লালারস পরীক্ষা করা হবে। গত ১৭, ১৮ এবং ১৯ মে ট্রেনে করে মুম্বই থেকে হাওড়ায় গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন ব্লকের ৩৯২ জন পরিযায়ী শ্রমিক ফেরেন। তাঁদের রাখা হয় সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। সকলের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে ‘স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন’-এ পাঠানো হয়। সম্প্রতি ১৪৪ জনের রিপোর্ট এসেছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ওই রিপোর্টেই দেখা যায়, ৭৬ জন করোনা আক্রান্ত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ইএসআই হাসপাতালে। বাকিদের রিপোর্টও কয়েক দিনের মধ্যে এসে যাবে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে যতজনের রিপোর্ট এসেছে, তার সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যার অনুপাত দেখে। কারণ, আক্রান্তের সংখ্যাটা অর্ধেকেরও বেশি। বাকিদের রিপোর্ট এলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেকটা বেড়ে যাবে বলেই জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একটা বড় অংশ আশঙ্কা করছেন।
এই অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকাতে বাড়তি সতর্ক হচ্ছে জেলা প্রশাসন। আর কাউকেই গৃহ নিভৃতবাসে পাঠানো হবে না বলে জানানো হয়েছে।
কারণ, পরিযায়ী শ্রমিকদের গৃহ নিভৃতবাসে রাখা হলে তাঁদের মধ্যে যদি কারও করোনা থাকে তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। সেটা হতে দেওয়া যাবে না। অন্য দিকে, সরকারি নিভৃতবাসে থাকা আবস্থাতেও পরিযায়ী শ্রমিকদের আত্মীয়স্বজন এসে কর্তৃপক্ষকে নানা ভাবে চাপ দেন। যাতে তাঁদের গৃহ নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। অনেকে ফাঁকফোকর দেখে প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস থেকে পালিয়েও যান।