গ্রামীণ হাওড়ার নানা এলাকায় একই ছবি

অটোর ভরসা গৃহস্থের সিলিন্ডারই

২০০০ সালের মাঝামাঝি থেকে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেএমডিএ এলাকায় পেট্রোল এবং ডিজেল চালিত অটো নিষিদ্ধ হয়ে যায়। একমাত্র এলপিজি চালিত অটোরই লাইসেন্স দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেয়। ডোমজুড়, সাঁকরাইল-সহ হাওড়ার কিছু ব্লক কেএমডিএ-এর আওতাধীন।

Advertisement

নুরুল আবসার

ডোমজুড় শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

এলাকায় কোনও পাম্প নেই। জ্বালানি আসবে কোথা থেকে? গ্রামীণ হাওড়ার বহু জায়গায় তাই অটো চলছে গৃহস্থ বাড়ির সিলিন্ডারের গ্যাসেই!

Advertisement

পরিবহণ দফতর জানে গ্রামীণ হাওড়ায় কোনও এলপিজি পাম্প নেই। এতদিনেও তা গড়ার কোনও চেষ্টা হয়নি। কিন্তু যাত্রী পরিবহণ তো আর থেমে থাকতে পারে না। তাই অটো-চালকেরা নিজেদের মতো করেই ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। এতে তাঁদের অটোর ইঞ্জিনের ক্ষতি হচ্ছে এবং খরচও বাড়ছে বলে মানছেন চালকেরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের নির্লিপ্ততার জন্য তাঁদের জ্বালানির জোগানের বিকল্প রাস্তা খুঁজতে হয়েছে।

২০০০ সালের মাঝামাঝি থেকে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেএমডিএ এলাকায় পেট্রোল এবং ডিজেল চালিত অটো নিষিদ্ধ হয়ে যায়। একমাত্র এলপিজি চালিত অটোরই লাইসেন্স দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেয়। ডোমজুড়, সাঁকরাইল-সহ হাওড়ার কিছু ব্লক কেএমডিএ-এর আওতাধীন। এইসব এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে কেএমডিএ। বাড়ি তৈরির অনুমতি নিতে হয় জেলা পরিষদ থেকে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের ফলে ওই সব এলাকাতেও পথে নামে এলপিজি অটো।

Advertisement

শুরুর দিকে অটো-চালকেরা ডানলপ বা সালকিয়ার পাম্পে গিয়ে এলপিজি ভরাতেন। কিন্তু অটোর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ভিড় এড়াতে এবং সময় বাঁচাতে ওই পথে যাওয়া বন্ধ করেন গ্রামীণ হাওড়ার ওই অটো-চালকেরা। তা হলে উপায়?

অটো-চালকেরা জানান, একাধিক গ্যাসের সংযোগ রয়েছে, এমন পরিবারগুলির কাছ থেকেই সিলিন্ডার সংগ্রহ করে অটোতে লাগানো হয়। সিলিন্ডার সংগ্রহের জন্য তাঁদের একটি চক্র রয়েছে। গ্রাহকদের গ্যাসের বই তারা নিজেদের কাছে রেখে দেয়।। সিলিন্ডার খালি হলেই ওই পরিবারের কর্তার মাধ্যমে গ্যাস সংস্থায় ফোন করে পরেরটা ‘বুক’ করিয়ে নেওয়া হয়। এ জন্য ওই পরিবারকে সিলিন্ডারের দাম-সহ কিছু বাড়তি টাকাও দেওয়া হয়।

বর্তমানে ডোমজুড়-ধূলাগড়ি, ডোমজুড়-কেশবপুর, সাঁকরাইল-দেওয়ানঘাটা— এমন অনেক রুটেই এ ভাবে চলছে এলপিজি চালিত অটো। শুধু ডোমজুড়েই যার সংখ্যা অন্তত ২০০। অটো-চালকদের অভিযোগ, শুরুর দিকে প্রশাসনের তরফ থেকে এলপিজি পাম্প তৈরির আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতদিনেও তা হল না। বহু যুবক রাস্তায় নতুন অটো নামাতে চেয়েও যে পারছেন না, তা মানছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা।

এক অটো-চালক বলেন, ‘‘এখন আর সালকিয়া বা ডানলপে গিয়ে অটোতে এলপিজি ভরানো সম্ভব নয়। গোটা একটা দিন নষ্ট হয়। প্রশাসনের নির্লিপ্ততার জন্যই এতদিনেও এখানে কোনও পাম্প হল না।’’ জেলা প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, সমস্যার কথা তাঁরা জানেন না। পরিবহণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘অটো-চালকেরা সমস্যার কথা আমাদের জানাননি। প্রতিকার হবে কী ভাবে?’’

এলাকায় অন্তত একটি এলপিজি পাম্পের দাবি তুলেছেন অটো-চালকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement