Industry

ফোর্ট গ্লস্টারের শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি, নোটিসে বিতর্ক

এতেই ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের পাল্টা বক্তব্য, শ্রমিকদের ২০ শতাংশ গ্র্যাচুইটি মেটানো সংক্রান্ত ‘ট্রাইব্যুনাল’-এর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তারা ‘আপিল’ করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাউড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৮
Share:

প্রতীকী চিত্র

১৭ বছর বন্ধ থাকার পরে আদালতের নির্দেশে বিক্রি হয়ে যাওয়া বাউড়িয়া ফোর্ট গ্লস্টার কেব্‌ল কারখানার শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি মেটানো নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।আদালতের নির্দেশে কারখানা বিক্রি এবং পাওনাদারদের দাবি মেটানোর তত্বাবধানে থাকা মধ্যস্থতাকারী সম্প্রতি কারখানার গেটে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে শ্রমিকদের জানিয়েছেন, তাঁরা যেন ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্র্যাচুইটির দাবি পেশ করেন। প্রতি শ্রমিককে মোট পাওনার ২০ শতাংশ করে গ্র্যাচুইটি দেওয়া হবে। ‘ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল’-এর নির্দেশ মেনেই ওই হারে গ্র্যাচুইটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মধ্যস্থতাকারীর দাবি।

Advertisement

এতেই ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের পাল্টা বক্তব্য, শ্রমিকদের ২০ শতাংশ গ্র্যাচুইটি মেটানো সংক্রান্ত ‘ট্রাইব্যুনাল’-এর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তারা ‘আপিল’ করেছে। সেই মামলার শুনানি হবে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর। তার আগে মধ্যস্থতাকারী এই বিজ্ঞপ্তি দিতে পারেন না। এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মধ্যস্থতাকারীকে তারা চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।

একসময়ে এই কেব্‌ল কারখানা ছিল এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম। ধীরে ধীরে তা রুগ্‌ণ পড়ে। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। পাওনাদার ব্যাঙ্কগুলি বিআইএফআর-এর দ্বারস্থ হয়। পরে অবশ্য বিআইএফআর তুলে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করে ‘ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল’। পাওনাদার ব্যাঙ্কগুলি ট্রাইব্যুনালে দেউলিয়া আইনে কারখানা বিক্রি করে তাদের পাওনা মেটানোর দাবিতে মামলা করে। ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কারখানা বিক্রির নির্দেশ দেয়। একজন মধ্যস্থতাকারীকেও নিয়োগ করে। বাউড়িয়ারই একটি চটকল সংস্থা ৮২ কোটি টাকায় এই কারখানা কিনে নেয়।

Advertisement

বন্ধ হওয়ার সময়ে কারখানায় শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১২৩৯ জন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই অবসর নিয়েছেন। কিন্তু কেউ গ্র্যাচুইটির টাকা পাননি। এখনও চাকরির মেয়াদ আছে ১৪০ জন শ্রমিকের। শ্রমিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, যাঁদের চাকরির মেয়াদ আছে এবং যাঁরা অবসর নিয়েছেন সকলেরই গ্র্যাচুইটি প্রাপ্য। কারখানার অন্যতম প্রভাবশালী শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র সম্পাদক আবেশ ঘোষ বলেন, ‘‘কারখানা বিক্রির টাকায় ব্যাঙ্কগুলি তাদের পাওনা সুদ-সহ উসুল করল। অথচ, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হল। ট্রাইব্যুনালের এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি। শুনানির দিনও ধার্য হয়েছে। তার আগেই মধ্যস্থতাকারী শ্রমিকদের ২০ শতাংশ গ্র্যাচুইটি দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দিলেন। তা ছাড়া এই করোনা আবহে ভিন্‌ রাজ্যের বহু শ্রমিক আসতেও পারবেন না। এই বিজ্ঞপ্তি আমরা মানব না। আপিল মামলার রায়ের পরে যা হয় হবে।’’

একই কথা জানান অন্য শ্রমিক সংগঠন টিইউসিসি-র সম্পাদক তাপস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘মধ্যস্থতাকারীকে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার জন্য চিঠি দিয়েছি। রাজ্য শ্রম দফতরকেও বিষয়টি জানাব।’’মধ্যস্থতাকারী বিজয় মুরমুরিয়া বলেন, ‘‘শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফ থেকে কোনও চিঠি এখনও পাইনি। আমরা যা করেছি তা ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ মেনেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement