ধৃতদের আরামবাগ আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (বাঁ দিকে)। আহত বিজেপি কর্মী চিকিৎসাধীন। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
রাজনৈতিক মোড় নিল আত্মহত্যার একটি ঘটনা। যার জেরে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে আহত হলেন চার জন। সোমবার রাতে খানাকুলের জগৎপুরের ঘটনা।
সোমবার আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন জগৎপুরের বাসিন্দা দিলীপ পণ্ডিত (৪২)। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তেতে ওঠে খানাকুলের রাজনৈতিক লড়াই।
বিজেপির দাবি, দিলীপকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছিল তৃণমূল কর্মীরা। তার জেরেই তিনি আত্মঘাতী হন। পক্ষান্তরে, তৃণমূলের দাবি, অনভিপ্রেত একটি ঘটনা নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দিলীপের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত ৯টা নাগাদ লাঠি, রড, বাঁশ নিয়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। তাতে আহত হন চার জন। তাঁদের মধ্যে কমল বারিক নামে এক বিজেপি কর্মীকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর বাঁ পা ভেঙে গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বাকি তিন জনের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অনুপ ধাড়া, উত্তম বারিক এবং অশোক পণ্ডিত।
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, দিলীপ বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এলাকায় মজবুত সংগঠন তৈরি করছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দিলীপকে কয়েকবার তৃণমূলের ছেলেরা হুমকিও দেয়। কালীপুজোর রাতে পরিকল্পনা করে তাকে মদ খাওয়ায়। আমাদের সন্দেহ, আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে ওঁকে। আমাদের ছেলেরা এর সূত্র খোঁজার চেষ্টা করছিল। সেই চেষ্টা ব্যর্থ করতেই তৃণমূল আমাদের ছেলেদের উপরে হামলা চালায়।”
অন্য দিকে, তৃণমূল নেতা তথা জগৎপুর পঞ্চায়েতের প্রধান প্রভাস সাউয়ের দাবি, “কালীপুজোর রাতে মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে দিলীপের পরিবারে বিবাদ হয়। এর পরেই সে বিষ খায়। তাঁর বাবা শান্তিনাথবাবুও পঞ্চায়েতে এই কথা বলেছিলেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছিল। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের ছেলেদের ওখানে পাঠিয়েছিলাম। তাদের মারধর করেছে বিজেপি। পুলিশ আমাদেরই আহত তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।”
দিলীপের বাবা শান্তিনাথ বলেন, “ছেলে বিজেপি করত ঠিকই, কিন্তু তার মৃত্যুর সঙ্গে রাজনীতির যোগ রয়েছে বলে আমি কিছু জানি না। কালীপুজোর রাতে পারিবারিক অশান্তির জেরে ও বিষ খেয়েছিল।”