আস্তাকুঁড়: জমছে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র
পিচ উঠে গিয়েছে বছর চার-পাঁচ আগেই। গোটা রাস্তা খানাখন্দ, মাটি এবং ইটের টুকরোয় ভরা। দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে চাঁপদানি পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের ছাইমাঠ রোডে। বিশেষ করে ওই রাস্তার ৫০০ মিটার অংশের অবস্থা শোচনীয়। কিছু দূরেই মাঠের একপাশে দিনের পর দিন ধরে আবর্জনা জমছে। পরিষ্কার করবে কে?
ওয়ার্ডের এই অবস্থার জন্য পুরসভাকেই দুষছেন এলাকাবাসী। যাঁদের একটা বড় অংশ ডালহৌসি জুটমিলের শ্রমিক। মিলটিও ওই রাস্তার ধারে। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধী দলের দখলে থাকায় এই ওয়ার্ডে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা নজর দেয় না। জিতেন্দ্র জয়সওয়াল নামে এক মিল-শ্রমিক বলেন, ‘‘পুরসভাকে অনেক বার বলা হয়েছে। কিন্তু রাস্তা সারানোর কোনও উদ্যোগ নেই। শুধু আমরাই নয়, এই রাস্তা তো পাশের ৮, ৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও ব্যবহার করেন। তাঁদেরও ভোগান্তি হচ্ছে।’’ ওয়ার্ডটির কাউন্সিলর কংগ্রেসের দারগা রাজভড়। একই অভিযোগ তাঁরও। তিনি বলেন, ‘‘ওই রাস্তাটি প্রতিদিন হাজার দেড়েক ছাত্রছাত্রী ব্যবহার করে। সংস্কারের জন্য পুরপ্রধানকে বহুবার জানিয়েছি। লাভ হয়নি। ওয়ার্ডটি তৃণমূলের হলে এতদিনে হয়ে যেত।’’
চাঁপদানির বাকি সব ওয়ার্ডের আবর্জনা বৈদ্যবাটীর কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু কেন সাত নম্বর ওয়ার্ডের আবর্জনা সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় না, তা নিয়ে অন্ধকারে এলাকাবাসী। এ ক্ষেত্রেও রাজনীতির অভিযোগই তুলেছেন ওই কাউন্সিলর। এ কথা অবশ্য মানতে চাননি পুরপ্রধান সুরেশ মিশ্র। বুধবারের মধ্যে নিশ্চিত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘আমি পুর এলাকায় উন্নয়নের কাজে রাজনীতির রং দেখি না৷ ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছি। আবর্জনা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষকে কিছু জানানো হয়নি।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভারী ট্রাকে মালপত্র নিয়ে গিয়ে ওখানে বাড়িঘর নির্মাণের ব্যবসা চালাচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলর৷ তাই রাস্তাটি খারাপ হচ্ছে।’’ নির্মাণ ব্যবসায় নিজে জড়িত কথা অস্বীকার করে ওই কাউন্সিলর জানান, জুটমিলে শেড তৈরি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কিছু বাড়িও তৈরি হচ্ছে এলাকায়। মালপত্র নিয়ে ভারী লরি-ট্রাক ঢুকছে।
ভোগান্তি কবে মিটবে, জানেন না এলাকাবাসী। তাঁরা জানান, কয়েকবার শুধু ফিতে দিয়ে মাপজোকই হয়েছে। আর কিছু নয়। রাস্তার ধারে রয়েছে একটি হিন্দি হাইস্কুল। তার পিছনের মাঠেই জমছে আবর্জনা। সেখানেই খেলার আসর বসায় ছোটরা। ফলে, দূষণে তাদের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে এলাকায়।