জোড়া দুর্নীতির নালিশ দলীয় সদস্যদেরই
Corruption

প্রধান গরহাজির, অচল পঞ্চায়েত

প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েতের সঞ্চালক দিলীপ পণ্ডিত, উপপ্রধান শেখ রিয়াজুল-সহ সদস্যদের বড় অংশ।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

পুরশুড়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পথবাতি কেনা এবং আমপানের ক্ষতিপূরণ বিলি। এ বার জোড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত পুরশুড়া-১ পঞ্চায়েতের প্রধান সমীরকুমার দাসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুললেন পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যদের একাংশ। উঠল প্রধানের পদত্যাগের দাবিও।

Advertisement

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দু’বছর ধরে ওই পঞ্চায়েতের গ্রামোন্নয়নের কাজ বারবার ধাক্কা খাচ্ছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কাজ করা যাচ্ছে না জানিয়ে দলের কাছে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে গত সোমবার থেকে প্রধান পঞ্চায়েতে আসছেন না। ফলে, অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে ওই পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েতটিকে সচল করতে আজ, সোমবার সদস্যদের সঙ্গে দলের জেলা সভাপতির আলোচনায় বসার কথা। তার আগেই সমস্যা আরও জটিল হল।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ১৩টি সংসদের রাস্তায় খুঁটি-সহ এলইডি আলো লাগানো হয়। আলো-সহ এক-একটি খুঁটিপিছু খরচ হয় ৪১০০ টাকা করে। গত মাসে দু’টি সংসদের (১২ ও ১৩ নম্বর) মোট ২০টি জায়গায় খুঁটি-সহ এলইডি আলো লাগানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আলো-সহ খুঁটিপিছু খরচ হয়েছে ২৮৪০ টাকা।

Advertisement

দু’দফায় আলোর ব্যবস্থাপনায় দামের এই ফারাকেই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েতের সঞ্চালক দিলীপ পণ্ডিত, উপপ্রধান শেখ রিয়াজুল-সহ সদস্যদের বড় অংশ। তাতে নাম জড়িয়েছেন পঞ্চায়েত আধিকারিকদেরও। ফেব্রুয়ারি মাসে ওই প্রকল্প নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনাও করা হয়নি বলে শেখ রিয়াজুলদের অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, আমপানের নিজের পরিবারের লোকদের ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দিয়েছেন প্রধান। শনিবার দলের নানা স্তরে এ সব কথা জানিয়েছেন রিয়াজুলরা।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান। তাঁর দাবি, “কোনও দুর্নীতি হয়নি। পথবাতির ক্ষেত্রে আগের ৩০ ওয়াটের এলইডি আলোর বদলে এ বার ২৫ ওয়াট নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, কম পুরু বিদ্যুতের তার এবং কিছু কম দামি জিনিস নেওয়া হয়েছে। এতে অসুবিধা হবে না। কম টাকায় অনেক বেশি জায়গায় পরিষেবা দিতে পারছি।’’ আর এক অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানের দাবি, ‘‘আমি আবেদন পাঠিয়েছিলাম। ব্লক প্রশাসন তদন্ত করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।” পঞ্চায়েত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পথবাতির যে কাজ হয়েছে, তা জেলা এবং ব্লক প্রশাসনের অনুমোদনক্রমেই। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, শাসকদলের নিজেদের গোলমালে তাঁদের মিথ্যা জড়ানো হচ্ছে।

বিডিও অচিন্ত্য ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েতের গোলমাল নিয়ে কোনও পক্ষেরই অভিযোগ প্রশাসনিক স্তরে আসেনি। প্রধান কেন পঞ্চায়েতে আসছেন না তা খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব আজ, সোমবার দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

গত রবিবার গ্রামের পুকুরে বাঁধানো ঘাট ব্যবহার নিয়ে পঞ্চায়েতের কয়েকজন সদস্য এবং তাঁদের দলবল তাঁকে মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে প্রধানের অভিযোগ ছিল। তারই জেরে সোমবার থেকে পঞ্চায়েতে যাওয়া বন্ধ করেন প্রধান। অভিযুক্তরা অবশ্য দাবি করেছেন, মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধবোধ থেকেই পদত্যাগ করতে চাইছেন প্রধান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement