সেই মাস্ক — নিজস্ব চিত্র
নাক ঢাকতে গেলে, মুখ বেরিয়ে যাচ্ছে। মুখ ঢাকতে গেলে নাক। মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে বিলি করা মাস্ক এখন গ্রামীণ হাওড়ায় আলোচনার কেন্দ্রে। চলতি মাসে মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে পড়ুয়াদের জন্য মুখাবরণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলি পড়ুয়ারা ব্যবহার করতে পারছে না বলে দাবি অভিভাবকদের। প্রথমত, সেগুলি আকারে খুবই ছোট। নাক-মুখ ঢাকা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, মাস্কের দু’পাশের বেল্টও কান পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না। অভিভাবকদের বক্তব্য, মাস্কের কাপড়ের গুণমান ভাল। তবে আকারে ছোট হওয়ায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সোমবার আমতার একটি প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিলের খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে মাস্ক বিলি করা হয়। তার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকদের বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, যা ব্যবহার করা যাবে না, তা নিয়ে কী করবেন তাঁরা? অনেকে আবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে মাস্ক ফেরত দিতে যান। জেলার বহু স্কুলেই এই ধরনের মুখাবরণ দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন।
শুধু প্রাথমিক স্কুলে নয়, আকারে ছোট মুখাবরণ অনেক হাইস্কুলেও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পাঁচলার একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের যে মাস্ক দেওয়া হয়েছে, তা আসলে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য উপযুক্ত। আবার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের যে মুখাবরণ দেওয়া হয়েছে, সেগুলি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যবহারের উপযোগী। তবে ওই স্কুলের অভিভাবকদের তরফে এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি বলে প্রধান শিক্ষক জানান। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে আগেই মাস্ক বিলি করেছি। তাই, এ বার শিক্ষা দফতর যে মাস্ক দিয়েছে, তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে তেমন কোনও উৎসাহ ছিল না।’’
ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রেন্ড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পিন্টু পাড়ুইয়ের আশঙ্কা, ‘‘মাস্ক সরবরাহে দুর্নীতি হয়েছে। ছোট মাস্ক সরবরাহ করে বরাদ্দের অনেক টাকা নয়ছয় করা হয়েছে।’’ তদন্ত চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান পিন্টুবাবু। যদিও জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) বাদল পাত্র বলেন, ‘‘এই রকম ঘটনা ঘটেছে বলে শুনিনি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’