জনসংযোগ: জনতার মাঝে বিধায়ক। —নিজস্ব চিত্র
বাড়ি বাড়ি জনসংযোগের নিদান দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশ পেয়ে সেই কাজে নেমেই মঙ্গলবার গ্রামবাসীর ক্ষোভের আঁচ পেলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।
বিধায়কের কাছে পোলবার গৌলো গ্রামের বাসিন্দা মালতি মাণ্ডির ক্ষোভ, ‘‘আমাদের কথা কেউ ভাবে না। এখনও মাটির বাড়িতে থাকি। শুধু হবে হবে শুনেই বুড়ি হয়ে গেলাম।’’ গোলাম সিদ্দিকি নামে এক বৃদ্ধ বলেন, ‘‘এখন রাস্তাঘাট পাকা হয়েছে। কিন্তু গরিবের দুর্দশা ঘোচেনি। কর্মসংস্থান চাই।’’
এর আগে মানুষের অভিযোগ বা পরামর্শ জানতে চুঁচুড়ায় দলীয় কার্যালয়ে অভিযোগ-বাক্স বসিয়েছেন বিধায়ক অসিতবাবু। বুজে যাওয়া কয়েকটি পুকুর খুঁড়তে অভিযান চালিয়েছেন। তবে, সেই অভিযানের মতোই বাড়ি বাড়ি জনসংযোগের ক্ষেত্রেও অনেকে বলছেন, ‘বিলম্বে বোধোদয়’।
গত লোকসভা নির্বাচনে হুগলি আসন তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। চুঁচুড়া বিধানসভা এলাকায় বিজেপির তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে তারা। এর পরেই সাধারণ মানুষের মন পেতে রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন অসিতবাবু। দলনেত্রীর নির্দেশমতো মঙ্গলবার বিকেলে তিনি দলের কর্মীদের নিয়ে পোলবার গৌলো গ্রাম থেকে সাড়াংপুর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় ঘোরেন। কারও বাড়ির উঠোনে চেয়ারে বসে কুশল বিনিময় করেন। রাস্তায় দাঁড়িয়েই কারও অভাব-অভিযোগের কথা জানতে চান। কারও ঘরের ভিতরে, কারও দোকানেও ঢুকে পড়েন। অভাব-অভিযওগের কথা জানতে বিলি করেন লিফলেটও।
গৌলো গ্রামে বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা শুনে বিধায়ক জানান, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা যতটা সম্ভব তিনি করবেন। সব সমাধান তাঁর হাতে নেই। তবে, সকলের কথা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানাবেন। অবশ্য ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি কেউ কেউ উন্নয়নের কথাও বলেছেন। সাড়াংপুরের মশিহার রহমান বলেন, ‘‘ আগে আমাদের গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। মাটির রাস্তায় বর্ষায় হাঁটা যেত না। রাস্তায় আলো থাকত না। এখন প্রায় সব রাস্তাই পাকা হয়েছে। আলো বসেছে। গ্রামবাসীর সুবিধা হয়েছে।’’ অসিতবাবু বলেন, ‘‘কিছু মানুষ ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। সেগুলি সমাধানের চেষ্টা করব।’’
এ দিন চুঁচুড়ায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘দলনেত্রীর নির্দেশ মেনে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় গিয়ে নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তুলবেন। এতদিন কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষের পাশে থেকে আমরা সবাই কাজ করব।’’