ধূলাগড়ির কারখানায় ডাকাতির কিনারা

গ্রেফতার বর্ধমানের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার

পুলিশের দাবি, আদতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চাকডিহি গ্রামের বাসিন্দা অনুপম দাস নামে বছর চল্লিশের ওই ইঞ্জিনিয়ারই ডাকাতির ‘মাস্টার-মাইন্ড’।

Advertisement

নুরুল আবসার

সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ন’দিন আগে হাওড়ার সাঁকরাইলের ধূলাগড়ির একটি কীটনাশক তৈরির কারখানার নিরাপত্তারক্ষীকে মারধরে করে নগদ টাকা এবং জিনিসপত্র লুট করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে কলকাতা থেকে এক কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সেই ইঞ্জিনিয়ার ওই কারখানাতেই কয়েক মাস আগে চাকরির আবেদন নিয়ে গিয়েছিল। অবশ্য চাকরি পায়নি।

Advertisement

পুলিশের দাবি, আদতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের চাকডিহি গ্রামের বাসিন্দা অনুপম দাস নামে বছর চল্লিশের ওই ইঞ্জিনিয়ারই ডাকাতির ‘মাস্টার-মাইন্ড’। কয়েক বছর আগে সে বর্ধমানের একটি রাসায়নিক কারখানায় কাজ করত। সেখানে সে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার দুর্নীতি করায় চাকরি যায়। তারপরে সে ধূলাগড়ির এই কীটনাশকের কারখানায় কাজ খুঁজতে আসে। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য সে কীটনাশক কারখানার খুঁটিনাটি বুঝে ফেলেছিল। ফলে, চাকরি না-পেলেও এখান থেকে অন্য ভাবে দাঁও মারার পরিকল্পনা করে সে। আর সে জন্য পাঁচ লক্ষ টাকায় কয়েকজন দুষ্কৃতীকেও ভাড়া করেছিল।

অভিযুক্তদের মধ্যে স্বপন দলুই নামে এক চোরাচালানকারীকে অনুপমের সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ধরা হয়েছে মহম্মদ সামিদ নামে এক ট্রাক-চালককেও। স্বপনের বাড়ি হুগলির দক্ষিণ ধনেখালি গ্রামে। সামিদ কলকাতার বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা। ওই দলের বাকিদের খোঁজে চল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে। কারখানার নিরপত্তা রক্ষীকে মারধর করে তাঁর কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে কারখানার অফিসে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে চারটি কম্পিউটার, একটি মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা হাতায়। তারপরে ড্রয়ার থেকে গুদামের চাবি নেয়। গুদাম থেকে তারা ৩৪৮টি কীটনাশক ভর্তি বাক্স নেয়। সব মিলিয়ে লুট হওয়া জিনিসপত্রের দাম প্রায় ৭৮ লক্ষ টাকা বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি।

কী ভাবে সন্ধান মিলল অনুপমের?

ঘটনার তদন্তে নামে সাঁকরাইল থানা এবং হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তারা জানায়, সিসিটিভি দেখে ট্রাকটিকে চিহ্নিত করে তার মালিকের খোঁজ মেলে। তিনি জানান, ট্রাকটি অনুপমকে ভাড়া দিয়েছেন। ট্রাক-চালক মহম্মদ সামিদের কাছ থেকেই পুলিশ অনুপমের সন্ধান পায়। অনুপমের কাছ থেকে পুলিশ সন্ধান পায় ক্যানিংয়ের স্বপন দলুইয়ের। কলকাতায় তার গুদাম আছে। গুদামে হানা দিয়ে পুলিশ স্বপনকে আটক করে। সেই গুদাম থেকেই লুট হওয়া ১৫৫টি কীটনাশকের প্যাকেট মেলে। তারপরেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যবহৃত ট্রাক এবং গাড়িটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। গাড়িটি অনুপমেরই বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement