রীতি মেনে দূষণহীন ভাসানের প্রতিশ্রুতি

মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার এই শহরে এসে বলেছিলেন, চন্দননগরকে দেখেই কলকাতায় দুর্গাপুজোয় বিসর্জনের কার্নিভাল হচ্ছে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৪
Share:

প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা। রবিবার বিকেলে চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে। ছবি: তাপস ঘোষ

মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার এই শহরে এসে বলেছিলেন, চন্দননগরকে দেখেই কলকাতায় দুর্গাপুজোয় বিসর্জনের কার্নিভাল হচ্ছে।

Advertisement

শুধু কার্নিভাল নয়, গঙ্গায় কার্যত দূষণহীণ ভাসানও এই রাজ্য শিখেছে চন্দননগর থেকেই। রাজ্যের সীমা ছাড়িয়ে দিল্লির যমুনাতেও এখন চন্দননগরের আদলেই ভাসান হয়। কারণ, গঙ্গার মতোই যমুনার জলও দূষণের কবলে। চন্দননগরের ভাসানের ভাবনা এখন রাজ্য জুড়েই নানা প্রান্তে মডেল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও চন্দননগরে জগদ্ধাত্রীর ভাসানে গঙ্গাকে যতটা সম্ভব দূষণের আওতার বাইরে রাখার চেষ্টা করা হবে বলে প্রশাসনের তরফে নিশ্চয়তা মিলেছে।

রবিবার সকাল থেকে ভাসান-পর্ব শুরু হয়ে যায়। যে সমস্ত পুজো শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছে, তাদের প্রতিমা ভাসান শুরু হয়েছে রাত থেকে। ভাসান শেষ হতে আজ, সোমবার দুপুর গড়িয়ে যাবে। অন্যান্য বছরের মতোই রানিঘাটে প্রতিমার ফুল-বেলপাতা আলাদা জায়গায় ফেলার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, যাতে সেগুলি কোনওভাবেই গঙ্গার জলে না মিশে যায়। পরে ওইসব ফুল-মালা-বেলপাতা অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে। এর পাশাপাশি, প্রতিমা গঙ্গায় ফেলার পরে তার মাটি জলে ধুয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাঠামো জল থেকে তুলে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রেনে বা পুর-কর্মীরা হাতে টেনে ওই সব কাঠামো তুলে গঙ্গার পাড়ে জড়ো করবেন। কাঠামো যাতে ফের জলে না ভেসে যায়, সে জন্য সব কাঠামো সরানো হবে গঙ্গার পাড় থেকে।

Advertisement

অনেক সময় ভাসানের সময় জলের তোড়ে কাঠামোর খড় খুলে জলে ভেসে চলে যায়। কাঠামোর খড় যাতে গঙ্গায় মিশে দূষণ না ছড়ায়, সে জন্য জলে দড়ি দিয়ে ঘেরাটোপ তৈরি করা হয়েছে পুরসভার তরফে। ভেসে যাওয়া কাঠামোর খড় দড়িতে এসে আটকে যায়। পরে পুর কর্মীরা তা তুলে গঙ্গার পাড়ে নিয়ে আসেন।

পুর কমিশানার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘গঙ্গার জল যাতে কোনওভাবেই দূষিত না হয়, তার জন্য আমরা সতর্ক আছি। গঙ্গা সাফাইয়ের কাজে

পুর-কর্মীদের পাশাপাশি প্রয়োজনে বাড়তি আরও লোক মোতায়েন করব।’’ পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, পর্যায়ক্রমে দ্রুত জল এবং গঙ্গার পাড় সাফ করে ফেলা হবে।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের প্রাক্তন আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই এই শহরে প্রথম গঙ্গার দূষণ ঠেকাতে ভাবনা শুরু হয়। পরে তাঁর তত্ত্বাবধানেই বিষয়টি কার্যকর করে পর্ষদ। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘মনে আছে, আমরা প্রথমবার গঙ্গা থেকে মোট ২২ ট্রাক ঠাকুরের কাঠামোর খড় তুলে ছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গঙ্গায় যে ভাবে দূষণের মাত্রা বেড়েছে, তাতে শিথিলতার কোনও জায়গা নেই। এখন সাধারণ মানুষকে আরও সচেতনভাবে দূষণ রোধে এগিয়ে আসতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement