জগজ্জননী: আজ মহাষষ্ঠী। চন্দননগরের বোড়োকালীতলা সর্বজনীনের প্রতিমা। ছবি: তাপস ঘোষ
জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রার সময় চন্দননগর শহরের বিস্তীর্ণ জায়গা দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎহীন থাকে। উঁচু প্রতিমা আর আলোর সাজসজ্জায় তার আটকে যাতে বিপত্তি না ঘটে, সে জন্য ওভারহেড তারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জল সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার, পুজোর পঞ্চমীতে চন্দননগরে বৈঠক করলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সমস্যা সমাধানে মিলল আশ্বাসও। ঠিক হয়েছে, ওভারহেড তার বদলে মাটির নিচ দিয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল্) নিয়ে যাওয়া হবে।
এ দিন চন্দননগর রবীন্দ্রভবনে বৈঠকে শোভনদেববাবু ছাড়াও ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, জেলার মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, চন্দননগরের পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু, কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির কর্তা-সহ অন্যরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে সমস্যার কথা জানানো হয়। পুর-কমিশনার স্বপনবাবু জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় উৎসবের দিনে আলোর জন্য বিখ্যাত শহরের বিভিন্ন প্রান্ত অন্ধকার হয়ে পড়ে। গোন্দলপাড়ায় পুরসভার জলপ্রকল্প এবং ৩৯টি গভীর নলকূপ অকেজো হয়ে যায় বিদ্যুৎ না থাকায়। ফলে পানীয় জল মেলে না। বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীরা সমস্যায় পড়েন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই পরিস্থিতি চলে।
সব শুনে বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, আগামী বছর পুজোর আগেই বিদ্যুতের তার মাটির নিচে বসানোর ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির ডিরেক্টর (ডিস্ট্রিবিউশন) স্বপন দে’কে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বিসর্জনের দিন বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়ে দেওয়ার কাজ যাতে দ্রুত করা যায়, সে ব্যাপারেও বিদ্যুৎমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পুজোকর্তারা। এ ব্যাপারেও চেষ্টা করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি আশ্বাস দেন, মানুষের অসুবিধা যতটা সম্ভব কম করতে সব ব্যবস্থাই করা হবে।
কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির আওতায় চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর থানা এলাকা মিলিয়ে মোট ১৭১টি পুজো হচ্ছে। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যোগ দেবে ৭৬টি পুজো। বিসর্জনের দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চন্দননগরের স্ট্র্যান্ড এবং রানিঘাটও নিষ্প্রদীপ হয়ে পড়ে। ওই দিন হাজার হাজার মানুষ এখানে জড়ো হন ভাসানের শোভাযাত্রা দেখার জন্য। প্রশাসনের তরফে কোনও কোনও অংশে জেনারেটর দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গত ১৯ অক্টোবর পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে চন্দননগর পুর কতৃর্পক্ষের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, যাতে মাটির তলা দিয়ে বিদ্যুৎবাহী তার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা যায়। কাজের আশ্বাস মেলায় সংশ্লিষ্ট সকলেই খুশি।