ব্যস্ত: ক্ষতিপূরণের ফর্ম বিলি পোলবা-দাদপুর ব্লকে। ছবি: তাপস ঘোষ
গত মাসের গোড়ায় আমন ধান ওঠার মুখে বুলবুল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হুগলি-সহ কয়েকটি জেলার চাষ। মঙ্গলবার থেকে হুগলিতে চাষিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ফর্ম বিলির কাজ শুরু করল প্রশাসন।
এ দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার পোলবা ব্লক অফিসে গিয়ে ক্ষতিপূরণের কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘বুলবুলে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় ধানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিশ্রুতিমতো চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে জেলায় জেলায়। আমাদের লক্ষ্য, আগামী এক মাসের মধ্যে চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ পুরো শেষ করে ফেলার। সে জন্য প্রতিটি জেলায় দ্রুত কাজ শুরু হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুলবুলে এখানে অন্তত ১ লক্ষ ৩২ হাজার হেক্টর জমির চাষ নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিপূরণের জন্য আপাতত রাজ্য সরকারের থেকে ১৭১ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। ১৮টি ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা ওই টাকা পাবেন। চাষিরা যাতে পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিসে গিয়ে ক্ষতিপূরণের প্রয়োজনীয় ফর্ম সংগ্রহ করেন, ইতিমধ্যে সেই আবেদনও করা হয়েছে। আপাতত ঠিক হয়েছে, বিঘায় মোট এক হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন চাষিরা। একজন চাষি সর্বোচ্চ ২৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘চাষিদের মধ্যে ফর্ম বিলির কাজ আপাতত চলবে। চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে সব কিছু খতিয়ে দেখে টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে।’’
এ দিন পোলবা ব্লক অফিসে ক্ষতিপূরণের ফর্ম তুলতে এসেছিলেন উত্তরপাড়া এলাকার চাষি সত্যবালা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘দু’বিঘে জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমার একটাই প্রতিবন্ধী ছেলে। সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা না পেলে পরের চাষ আর করতে পারব না।’’ গৌতম রায় নামে আর এক চাষি বলেন, ‘‘৭৬ শতক জমিতে চাষ করেছিলাম। সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এছাড়া উপায় নেই।’’ এ দিন চণ্ডীতলা-১ ব্লকেও ফর্ম বিলি শুরু হয়। ব্লকের কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানান, চাষিরা যাতে ক্ষতিপূরণের কথা জানতে পারেন, সে জন্য মাইকে প্রচার চলছে।