লঞ্চের উপরেই মদ্যপানের আসর

যাত্রীদের অভিযোগ, এক শ্রেণির যাত্রী লঞ্চে উঠেই মদের বোতল ও খাবার নিয়ে ডেকে চালকের কেবিনের কাছে চলে যান। শুরু করে দেন মদ্যপান।

Advertisement

নুরুল আবসার

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০১:০২
Share:

আবেদন: গাদিয়ারা জেটিঘাটের টিকিট কাউন্টারে। নিজস্ব চিত্র

চলন্ত লঞ্চে বসেই চলছে দেদার মদ্যপান। এক শ্রেণির যাত্রীদের এ হেন আচরণে অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছেন অন্য যাত্রীরা। ঘটছে দুর্ঘটনাও। রোজকার এই ছবি গাদিয়ারা থেকে নূরপর ও গেঁওখালিগামী যাত্রাবাহী লঞ্চের। অভিযোগ, এক শ্রেণির যাত্রী নিয়মিত এই আসর বসাচ্ছেন। চালক এবং অন্য লঞ্চ কর্মীরাও কখনও কখনও যোগ দিচ্ছেন আসরে। নিত্যযাত্রীরা জানান, চালকদের একাংশও অনেকসময় মদ্যপ অবস্থায় লঞ্চ চালান।

Advertisement

যাত্রীদের অভিযোগ, এক শ্রেণির যাত্রী লঞ্চে উঠেই মদের বোতল ও খাবার নিয়ে ডেকে চালকের কেবিনের কাছে চলে যান। শুরু করে দেন মদ্যপান। সেই সময় কোনও যাত্রী ডেকে উঠে বসতে চাইলে তাঁকে উঠতে দেওয়া হয় না। দুপুরের পর থেকে কার্যত সব লঞ্চেই বসে মদ্যপানের আসর। সন্ধের পর পরিস্থিতি চরমে ওঠে। মদের আসর তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায় নূরপুরগামী লঞ্চে। এর ফলে দুর্ঘটনাও ঘটে। মাস কয়েক আগেই নূরপুরগামী লঞ্চ থেকে এক যাত্রী নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন। কোনওরকমে তাঁকে উদ্ধার করেন লঞ্চের কর্মীরা। অভিযোগ, মদ্যপান করতে করতেই নদীতে পড়ে যান তিনি।

এক শ্রেণির যাত্রীদের মদ্যপানের জেরে অন্য যাত্রীদের প্রাণান্তকর অবস্থা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, মদ্যপানকে কেন্দ্র করে প্রায়ই মারামারি, অশান্তি লেগে যায়। সম্প্রতি গেঁওখালিগামী একটি লঞ্চে কয়েকজন যাত্রী মদ্যপান করছিলেন। লঞ্চ কর্মীরা তাদের বাধা দেন। লঞ্চ গেঁওখালিতে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে আশাপাশের আরও কয়েকজনকে জোগাড় করে লঞ্চকর্মীদের বেধড়ক মারধর করেন মদ্যপানে বাধা পাওয়া যাত্রীরা।

Advertisement

বছরখানেক আগে প্রশাসনের তরফে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গাদিয়াড়া জেটিঘাটে বহাল করা হয়। তবে তারপরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাতায় কলমে জেটিঘাটে বহাল করা হলেও অনেক সময়ই তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। ফলে ওই সময় জেটিঘাটে নজরদারি থাকে না। শ্যামপুর থানা থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, লঞ্চে বসে মদ্যপান রুখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। ধরাও পড়ে অনেকে। লঞ্চের চালক ও কর্মীদের একাংশও যে যাত্রীদের সঙ্গে মদ্যপান করেন তা মেনে নেন জেটিঘাট কর্তৃপক্ষ। জেটিঘাট ইনচার্জ উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়ে আমরা কয়েকজন লঞ্চকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন আর লঞ্চকর্মীরা লঞ্চে বসে মদ্যপান করেন না। কিন্তু বারবার বলেও যাত্রীদের একাংশকে মদ্যপান করা থেকে বিরত করা যাচ্ছে না। জেলা পুলিশ কর্তাদের চিঠি দিয়ে আরও কড়া পুলিশি পাহারার আবেদন জানানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement