বিজেপি সমর্থকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতাকর্মীদের কাটমানি ফেরতের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই হুগলিতে এ নিয়ে বিজেপির বিক্ষোভ অব্যাহত। কখনও কাউন্সিলর, কখনও পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে কাটমানি ফেরতের দাবিতে। সেই বিক্ষোভ এ বার পৌঁছল মন্ত্রীর বাড়ির সামনে।
শুক্রবার সকালে বিজেপির একদল নেতাকর্মী চুঁচুড়ার ফুলপুকুরে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তথা হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি তপন দাশগুপ্তের আবাসনের সামনে ধর্নায় বসে কাটমানি ফেরতের দাবি জানান। তপনবাবু তখন বাড়িতে ছিলেন না। বিধানসভায় গিয়েছিলেন। বিক্ষোভের খবর তাঁর কাছে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীরা মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে বলে তপনবাবু পুলিশের কাছে ফোনে অভিযোগ করেন। এর পরেই বিজেপির ওবিসি মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউকে পুলিশ আটক করে।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ সুরেশের নেতৃত্বেই বিজেপির বেশ কিছু স্থানীয় নেতাকর্মী মিছিল করে মন্ত্রীর আবাসনের কাছে যান। সেখানে রাস্তায় বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে ঠিকাদার, অটো, টোটো-চালকদের থেকে নেওয়া কাটমানি তপনবাবুকে ফেরত দেওয়ার কথা লেখা ছিল। টানা স্লোগান তুলেও একই দাবি জানানো হয়। সরকারি প্রকল্পে কাটমানির টাকা ফেরতের দাবিও তোলা হয়। প্রায় আধ ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। সুরেশের দাবি, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি টোটো, অটো চালাতে তৃণমূলের লোকজনকে টাকা দিতে হয়। সেই টাকা লোক মারফত মন্ত্রীর কাছে পৌঁছয়। টোটো, অটোচালক থেকে ঠিকাদার— সকলের টাকাই ফেরত দিতে হবে। তৃণমূলের ছোটখাটো, চুনোপুঁটি নেতাদের বাড়ির সামনে আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি। আমাদের কাছে খবর আছে, সব টাকা এই হেড কোয়ার্টারে (মন্ত্রীর কাছে) আসে। তাই এখানে অবস্থান করেছি।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, বিজেপির বিক্ষোভের বিষয়টি কানে পৌঁছতে তপনবাবু বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুবীর নাগকে ফোন করে ক্ষোভের কথা জানান। তার পরেই পুলিশকে বলেন ব্যবস্থা নিতে। তপনবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী এলাকায় বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। সেই কারণেই মিথ্যা অভিযোগ তুলে হইচই করছে। বদনাম করার চেষ্টা করছে। পুলিশকে বলেছি ওদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা বরদাস্ত করব না।’’
জেলার বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য সুরেশের পাশে দাঁড়াননি। দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুবীরবাবু জানিয়ে দেন, ওই কর্মসূচি দলের অনুমোদন ছাড়াই হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমাদের দল কোনও দায়িত্ব নেবে না।’’ বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পাল বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় আছি। একটা ঘটনার কথা শুনেছি। ঠিক কী ঘটেছে খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করছি।’’