উচ্ছেদের নোটিসের প্রতিবাদে ঝাঁটা হাতে মিছিল। ব্যান্ডেলে। নিজস্ব িচত্র
রেলের জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা হলে মহিলাদের ঝাঁটাপেটার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। এ বার আরও সুর চড়িয়ে তিনি নিদান দিলেন, ঝাঁটায় কাজ না হলে মুঙ্গেরের লাঠি মেরে তাড়াতে হবে।
ব্যান্ডেলের সাহেববাগান, সাহেবপাড়া, আমবাগান, ক্যান্টিনবাজার, পিরতলা প্রভৃতি জায়গায় রেলের জমিতে বসতি রয়েছে। সম্প্রতি ওই জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য রেলের তরফে নোটিস দেওয়া হয়। তাতে সেখানে বসবাসকারী লোকজন সমস্যায় পড়েন। রেলের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই আন্দোলনে নামে তৃণমূল। বুধবার বিধায়ক অসিতবাবুর নেতৃত্বে এলাকায় মিছিল হয়। ভোটের আবহে রেলের এই সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর এ রাজ্যের শাসক দল। আন্দোলনকারীদের দাবি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা চলবে না। মিছিলে মহিলাদের হাতে ছিল ঝাঁটা।
চলতি মাসের গোড়ায় বিধায়ক এলাকার মহিলাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, কেউ যেন বাড়ি ছেড়ে না যায়। কেউ কাগজপত্র দেখতে চাইলে তাঁরা যেন ঝাঁটা মেরে তাঁদের বিদেয় করে দেন। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে বিধায়ক বলেন, ‘‘রেলের লোক এলে যাতে স্থানীয়েরা ঝাঁটা মেরে তাড়াতে পারেন, তাই এই ঝাঁটা মিছিল। এতেও কাজ না হলে আগামী দিনে মুঙ্গেরের লাঠি নিয়ে রেলের লোকজনকে তাড়া করে এলাকাছাড়া করতে হবে।’’
বিধায়কের প্রশ্ন, ‘‘হঠাৎ করে খালি হাতে তুলে দেওয়া হলে এত মানুষ যাবেন কোথায়? গরিব মানুষের মাথা থেকে ছাদ কেড়ে নেওয়ার এ কেমন নীতি?’’ তাঁর ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্রের মতোই মুঙ্গেরের লাঠিরও নাম আছে। মানুষকে ভরসা জোগাতেই বিধায়ক ওই লাঠির কথা বলেছেন। মানুষের কথা ভেবে রেলের পিছিয়ে যাওয়া উচিত।’’
বিধায়কের বক্তব্য নিয়ে রেলের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এক আধিকারিক শুধু বলেন, ‘‘যা করা হচ্ছে, নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের আন্দোলনকে ‘ভোটের রাজনীতি’ হিসেবে দেখছে বিজেপি। দলের নেতা স্বপন পালের বক্তব্য, ‘‘ওখানে স্কুল করার জন্য রেল জবরদখল উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছে। পায়ের তলায় জমি নেই বলে তৃণমূল ভোটের কথা ভেবে লোক খেপাচ্ছে।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ভোটের বাক্সে জেতার মুরোদ ওঁদের নেই। তাই প্রকাশ্যেই ঝাঁটা-লাঠির হুঙ্কার দিতে হচ্ছে। এমন কথা ওঁদের মুখেই শোভা পায়।’’