টাকা ফেরতের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে হাতজোড় ছাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র।
তাঁরা টাকা ফেরত চেয়েছেন। এই ‘অপরাধে’ এ বার হাওড়ার ফুলেশ্বরের সঞ্জীবন হাসপাতালের নার্সিং কলেজের ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকদের মারধরের অভিযোগ উঠল সেখানকার কর্মী এবং কিছু বহিরাগত যুবকের বিরুদ্ধে। শুক্রবারের ওই ঘটনার ছবি তুলতে গেলে চিত্রসাংবাদিকদেরও মারধর করা হয় এবং তাঁদের মোবাইল কেড়ে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
বেআইনি ভাবে চলা রাজ্যের ন’টি নার্সিং কলেজের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, তার মধ্যে রয়েছে সঞ্জীবন হাসপাতালের নার্সিং কলেজও। এ দিন গোলমালের কথা শুনে ঘটনাস্থলে আসেন হাসপাতালের অধিকর্তা শুভাশিস মিত্র। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রছাত্রীরা। চিত্রসাংবাদিকদের উপরে হামলায় শুভাশিসবাবু দুঃখপ্রকাশ করলেও ছাত্রছাত্রীদের নিগ্রহের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘দু’পক্ষের মারপিট হয়েছে। তাতে হাসপাতালেরই ছয় কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। বাইরের কিছু দালাল-চক্র চাইছে নার্সিং কলেজটা বন্ধ করতে। তারাই কলেজের নামে বদনাম করছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।’’
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাসও দেন শুভাশিসবাবু। তিনি বলেন, ‘‘যে সব ছাত্রছাত্রী টাকা ফেরত পেতে চান, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে আবেদন করতে হবে এখানে। কয়েকদিনের মধ্যে তাঁরা টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন।’’
খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে ওই নার্সিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন অনেকেই। ভর্তির টাকা জোগাড় করতে কারও বাবাকে জমি বিক্রি করতে হয়েছে, কাউকে গাড়ি। কেউ শেষ সম্বলও দিয়ে দিয়েছেন। কলেজটি বেআইনি জানার পরে গত বুধবারই সেখানে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বহু ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকেরা। তাঁদের দাবি, সে দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দু’দিন পরে টাকা ফেরতের দিন ঘোষণার কথা বলেছিলেন। সে জন্যই এ দিন তাঁরা এসেছিলেন। অথচ, দিন ঘোষণা না-করে হামলা চালানো হল। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বর্ণালি মিত্র নামে এক ছাত্রী বলেন, ‘‘মাকে নিয়ে এসেছিলাম টাকা ফেরতের দিন জানতে। মাকে ওরা মারধর করে, মাটিতে ফেলে দেয়। মা আহত হন।’’ সুপর্ণা মজুমদার নামে আর এক ছাত্রী বলেন, ‘‘কয়েকজন যুবক নোংরা ভাষায় কথা বলে। আমাদের ঠেলতে ঠেলতে বের করে দেয়।’’