সবুজমালা প্রকল্পের গাছ নেই। গোঘাটের গদারচক খুশিগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
‘সবুজমালা’ প্রকল্পে সরঞ্জাম কেনার নামে কয়েক লক্ষ টাকার ভুয়ো বিল করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত গোঘাট-২ ব্লকের বদনগঞ্জ-ফলুই ১ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগ তুলেছেন দলের পঞ্চায়েত সদস্য এবং নেতৃত্বের একাংশ। গত সোমবার এ নিয়ে পঞ্চায়েতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়। ব্লক প্রশাসনেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। অভিযোগকারীদের মধ্যে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মুকুন্দ হাজরা জানান, এক বছর আগে কাজটা হয়েছে দেখিয়ে মোট ৩৩টি ভুয়ো বিল করা হয়েছে। বিলগুলিতে ১২-১৩ জন উপভোক্তাকে গাছ লাগানোর জন্য সার, বেড়া দেওয়ার বাঁশ, দড়ি ইত্যাদি সরঞ্জাম কিনে দেওয়ার খরচ ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই সব সরঞ্জাম বা গাছের অস্তিত্বই নেই দাবি করে মুকুন্দ বলেন, ‘‘আমাদের হিসাবে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার বেশি ভুয়ো বিল করে দুর্নীতির চেষ্টা হচ্ছে। বিষয়টা ব্লক প্রশাসনে জানিয়ে তদন্তের দাবি করা হয়েছে।” ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃক্ষরোপণের এই কাজটি ব্যক্তিগত উপভোক্তা প্রকল্পের। কিন্তু নথিভুক্ত করা হয়েছে খরা মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ প্রকল্পে। এটাও সম্পূর্ণ অবৈধ। বিডিও অভিজিৎ হালদার বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। বিলগুলির টাকা মেটানোর প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
পঞ্চায়েত প্রধান লক্ষ্মী মালিক বলেন, “দুর্নীতি হওয়ার কথা নয়। বিষয়টা ব্লক প্রশাসন দেখছে। আমরা ওই সব বিলের টাকা পরিশোধ বন্ধ রেখেছি।” যিনি এই বিল বানিয়েছেন বলে অভিযোগ, পঞ্চায়েতের সেই নির্মাণ সহায়ক সুশীল ভক্তর দাবি, “কাজের পর নানা তথ্য নথিভুক্ত করে বিল তৈরি করতে কিছুটা বিলম্ব হওয়া ছাড়া বিলে কোনও দুর্নীতি হয়নি।” একই দাবি যে ঠিকাদারের নামে বিল হয়েছে, রামানন্দপুর গ্রামের সেই শেখ মহসিনেরও। তিনি বলেন, “আমার তরফে কোনও দুর্নীতি নেই।” বিতর্কিত বিলগুলির একটি তালিকায় দেখা যাচ্ছে, গদারচকে মানোয়ারা মণ্ডল-সহ মোট ১৩ জন উপভোক্তাকে গাছ বাদে সার, দড়ি, বাঁশ, ওষুধ ইত্যাদি কিনে দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েতের খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ২৩ হাজার ১৯৭ টাকা। মানোয়ারার দাবি, তাঁকে কিছু গাছ ও সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছিল। গদারচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সে সব গাছ লাগানো হলেও এখন আর নেই। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর গরমে গাছ লাগিয়েছিলাম। বেড়া দেওয়া হলেও সব গরু-ছাগলে নষ্ট করে দিয়েছে।”