কৃষকসভার হাওড়া জেলা কমিটি

অভিযুক্তকে পদে রাখা নিয়ে ক্ষোভ

কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তাকে দলের কোনও পদে রাখা যাবে না। অথচ দলের অধীনস্থ গণসংগঠনের পদে থাকা যাবে।

Advertisement

নুরুল আবসার

জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০১:৫১
Share:

কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তাকে দলের কোনও পদে রাখা যাবে না। অথচ দলের অধীনস্থ গণসংগঠনের পদে থাকা যাবে।

Advertisement

সর্বভারতীয় কৃষকসভার হাওড়া জেলা কমিটিতে এই সূত্র মেনে এক নেতার অন্তর্ভুক্তিতে সিপিএমের অন্দরমহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম নামে ওই সিপিএম নেতা এক সময় ছিলেন জোনাল কমিটির সম্পাদক। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে দলের কোনও পদে তাঁকে না নেওয়া হলেও, কৃষকসভার জেলা কমিটিতে তিনি থেকে গিয়েছেন। জানুয়ারি মাসে আমতায় কৃষকসভার জেলা সম্মেলনের পরে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাতেও তাঁকে রাখা হয়েছে। আর এই নিয়েই দলের একাংশ অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাঁদের আশঙ্কা, এ ভাবে যদি দল এবং গণসংগঠন চলে তা হলে সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করা মুশকিল হবে।

এক সময়ে সিরাজুল ছিলেন জগৎবল্লভপুরে সিপিএমের দাপুটে নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে দলের অন্দর থেকেই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ জমা পড়ে। দলীয় সূত্রের খবর, অভিযোগের প্রক্ষিতে ২০০৪ সালে তাঁকে জোনাল কমিটির সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সরকারের যে সব কমিটিতে দলের পক্ষ থেকে তিনি প্রতিনিধিত্ব করতেন সরিয়ে দেওয়া হয় সেই সব পদ থেকেও। তবে দলের সাধারণ সদস্য হিসাবে থেকে যান তিনি।

Advertisement

একই সঙ্গে কৃষকসভার জেলা কমিটিতে তাঁকে রাখা হয়। শুধু দুর্নীতির অভিযোগই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে কৃষকসভার কাজে নিষ্ক্রীয়তার অভিযোগও উঠেছে।

জানুয়ারি মাসে আমতায় কৃষকসভার জেলা সম্মেলনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, ২০১৬ সালে কৃষকসভার মোট ৩১টি সভার মধ্যে মাত্র ১০টিতে যোগ দিয়েছিলেন সিরাজুল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘শারীরিক অসুস্থতার কারণেই কমরেড সিরাজুল ইসলাম বেশ কিছু সভায় আসতে পারেননি।’’ তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন জেলা কমিটির বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। তার সমালোচনা করে বলা হয়েছে, ‘‘বর্তমান জটিল পরিস্থিতির উপযোগী সংগঠন গড়ে তোলার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে জেলা কমিটির সদস্যদের যে ভূমিকা থাকা দরকার তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থাকছে না।’’

সিপিএমের সদস্যদের একটা বড় অংশের মন্তব্য, এ থেকেই তো প্রমাণিত হয় যে সিরাজুল সংগঠনের কাজেও সময় দিচ্ছেন না। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূলের বিরুদ্ধে দাদাগিরি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেটা একটা বড় ইসু হবে বিরোধীদের কাছে। সেই লড়াই চালাতে গেলে দলের ভাবমূর্তিও স্বচ্ছ থাকতে হবে।

কী বলছেন দলের জেলা নেতৃত্ব?

সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক তথা দলের রাজ্য কমিটির পক্ষে হাওড়া জেলা কৃষকসভার দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিপ্লব মজুমদার অবশ্য এতে অন্যায় দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘সিরাজুলের বিরুদ্ধে দলের ভিতরে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল এটা সত্যি। দল নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে তার ফয়সালা করেছে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কৃষকসভার সঙ্গে যুক্ত। তাই তাঁকে জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement