প্রতীকী ছবি।
ভাড়াটে বিজেপি সমর্থক। তাই এক মাসের মধ্যে তাঁকে তুলে না দিলে বাড়িওয়ালার ছেলেকে খুন করা হবে। এমনই হুমকি দেওয়া চিঠি পেয়ে সপরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন প্রাক্তন এক সেনাকর্মী। শুধু তা-ই নয়, গভীর রাতে ওই সেনাকর্মীর মোটরবাইকে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন থানার দানেশ শেখ লেন এলাকার একটি সরকারি আবাসনে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্দুল রোডে নিজস্ব মালিকানার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে প্রাক্তন সেনাকর্মী বিশ্বজিৎ দে-র। ওই ফ্ল্যাটে ভাড়াটে বসিয়ে গত তিন বছর ধরে তিনি রয়েছেন সরকারি কর্মচারী স্ত্রীর কোয়ার্টার্সে। তাঁদের বছর ষোলোর একটি ছেলে রয়েছে। স্ত্রী শঙ্করী দে হাওড়া জেলা হাসপাতালের কর্মী।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে আন্দুল রোডের ওই আবাসনের নীচে রাখা বিশ্বজিৎবাবুর মোটরবাইকে কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আগুন দেখতে পেয়ে আবাসনের বাসিন্দারা জল দিয়ে তা নিভিয়ে ফেলেন।
শনিবার প্রাক্তন ওই সেনাকর্মী বলেন, ‘‘মোটরবাইকে আগুন লাগানোর পরেই এ দিন সকালে ফ্ল্যাটের সদর দরজায় দেখি, কেউ একটা চিঠি দিয়ে গিয়েছে। আঁকাবাঁকা অক্ষরে লেখা, আমার ভাড়াটে বিজেপি কর্মী। ওঁকে তুলে না দিলে আমার ছেলেকে খুন করা হবে। চিঠির পিছনে লেখা টিএমসি। এই চিঠি পাওয়ার পরেই পুলিশকে জানাই। আমরা ভীষণ আতঙ্কে আছি।’’
বিষয়টিকে কোনও ভাবেই হাল্কা করে দেখতে রাজি নন হাওড়ার বিজেপি সভাপতি (সদর) সুরজিৎ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাড়াটে ওখানে আছেন, তিনি বিজেপি করতেই পারেন। এটা তাঁর অপরাধ নয়। যারা এই ধরনের হুমকি-চিঠি দেয়, তারাই মূল অপরাধী। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করব ওই পরিবারটিকে উপযুক্ত নিরাপত্তা দিতে ও দোষীদের ধরতে।’’
এ বিষয়ে রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী তথা তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘এই চিঠিটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তৃণমূলকে বদনাম করার জন্যই চিঠিতে নাম লিখে দিয়েছে। আমি পুলিশকে বলেছি, অপরাধীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, পাড়ার লোকজন এই ঘটনায় জড়িত। কারণ চিঠিতে ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীর ডাকনাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে খুব শীঘ্রই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করব।’’